বিশেষ প্রতিনিধি::
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, করোনা মহমারির কারণে আমাদের প্রকল্পগুলো কিছুটা গতিহীন হলেও আমাদের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে টাকা কোন সমস্যা নয়। বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা আমাদেরকে ঋণ দিতে খুবই আগ্রহী। আমাদেরকে ঋণ দিয়ে তারা আস্তায় ভোগে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মহমারি করোনা। আমাদের অনেক বড় প্রকল্পের বিদেশি এক্সপার্টরা নিজ নিজ দেশে চলে গেছে। এ কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে। তিনি দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি তুলে ধরতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান। আগামী সোমবার মহান জাতীয় সংসদে সুনামগঞ্জের বহুল কাঙ্খিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বিল উত্থাপন হবে বলে জানান মন্ত্রী।
বৃহষ্পতিবার বিকেলে সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাব আয়োজিত করোনাকালীন প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক প্রণোদনার চেক স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে বিতরণকালে এসব কথা বলেন। পরিকল্পনামন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনার চেক সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের ৩৫ জন সাংবাদিককে প্রদান করেন।
সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি পঙ্কজ কান্তি দে ও সাধারণ সম্পাদক একেএম মহিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আর্থিক প্রণোদনা প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য ড. জয়াসেন গুপ্তা, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য শামীমা শাহরিয়ার, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, সুনামগঞ্জ পৌর মেয়র নাদের বখত, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির ইমন প্রমুখ।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, আগামী সোমবার জাতীয় সংসদে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত বিল উত্থাপন হবে। আশা করি ওইদিনই এটি পাশ হবে। সে বিষষে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা সবাই আন্তরিক। তিনি বলেন, করোনার কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বয়স্ক সাংসদদের নিয়মিত সংসদে আসতে বারণ করেছেন। আমারও ওইদিন না যাওয়ার কথা র্ছিল। কিন্তু আমাদের জেলাবাসীর আবেগ ও আকাঙ্খা-স্বপ্ন বাস্তবায়নের বিশ্ববিদ্যালয় বিল সংসদে উত্থাপন হবে তাই আমি ওইদিন সংসদে উপস্থিত থাকব। আমার চীফ হুইপ, সংসদীয় কমিটির সভাপতি এবং শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। ইনশাল্লাহ আগামী সোমবার আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান অবহেলিত সুনামগঞ্জকে দেশের সম্ভাবনাময় ‘কুমারি এলাকা’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এতদিন আড়ালে ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি পড়েছে হাওরে। তিনি হাওরের প্রতি আগ্রহী। হাওরের প্রতি তার সীমাহীন আবেগ রয়েছে। এই বিশাল কুমারি এলাকাকে উন্নয়নে বদলে দিতে তিনি হাওরবাসীর প্রতি খুবই আন্তরিক। তাই হাওরের উন্নয়নে কোন প্রকল্প নিয়ে গেলে তিনি সাথে সাথে অনুমোদন দিয়ে দেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দুই বছর আগে প্রধানমন্ত্রী একনেকসভায় সুনামগঞ্জের প্রাকৃতিক দিক বিবেচনা করে আমাদেরকে হাওরে উড়াল সড়ক করার পরিকল্পনা দিয়েছিলেন। এটা তার মাথা থেকেই এসেছে। আমরা হাওরে শেখ হাসিনা ওড়াল সড়ক বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছি। আশা করি শিগ্রই এটি অনুমোদন হবে।
দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অকল্পনীয় ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরার ইঙ্গিত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আমাদের সিগন্যাল দিয়েছেন। আমাদের পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট শাখাও মাঠ ঘুরে প্রকৃত ব্যয়ের তথ্য পর্যালোচনা করবে। বাংলাদেশের জনগণের টাকা যাতে কোন অপচয় না হয় সেজন্য কাজ করব আমরা।
মন্ত্রী বলেন, সারাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে সুনামগঞ্জ জেলা। আমরা সুনামগঞ্জ নেত্রকোণা হয়ে সড়ক পথ করব। শিগ্রই দিরাই-শাল্লা-আজমিরিগঞ্জ মহাসড়কের কাজ শুরু হবে। কুশিয়ারা নদীতে নির্মিত সেতুর কাজও শেষ হবে।