ছাতক প্রতিনিধি::
ছাতকের তাতিকোনা এলাকায় গত ১০মে কালীমন্দির ভাংচুর ও হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বসত বাড়িতে হামলার ঘটনায় মামলা করে বিপাকে পড়েছেন বাদী ও তার পরিবারের লোকজন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরা-ফেরা করলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। আসামীদের প্রতিনিয়ত হুমকী-ধামকিতে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন- এমন অভিযোগ তুলেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন। মঙ্গলবার দুপুরে তাতিকোনা কালীমন্দির প্রাঙ্গনে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের এক সভায় তারা নিরাপত্তাহীনতাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। বক্তারা বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ১০মে রাতে তাতিকোনা এলাকার একটি গোষ্টি পরিকল্পিতভাবে কালীমন্দির ভাংচুরসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের বসত বাড়িতে প্রবেশ করে নারী-পুরুষদের নির্বিচারে মারধোর করেছে। ঘটনার পরপরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এএসপি সার্কেল, ওসিসহ উপজেলা পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরদিন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। জড়িতদের নাম উল্লেখ করে ছাতক থানায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়। কিন্তু আসামী গ্রেফতারে পুলিশের ভুমিকা রহস্যজনক হওয়ায় বাদী পক্ষ সু-বিচার পাওয়া নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছেন। বাদী ও বাদীর স্বজনদের প্রকাশ্যে হুমকী-ধামকি দেওয়ার ঘটনায় ১৪ জুন তাতীকোনা এলাকার পিপলু দাস ছাতক থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ তার জিডি নেয়নি। পরে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ১৭ জুন পিপলু দাস এবং একই ঘটনায় ১৮ জুন সন্টু দাস পৃথক দুটি জিডি করলেও আইনী কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। মামলার বাদীসহ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের উপর হামলাসহ অনাকাংখিত ঘটনা আসামীরা ঘটাতে পারে বলে তারা মনে করছেন। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সু-বিচার পাওয়ার প্রত্যাশায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলেও বক্তারা উল্লেখ করেছেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন আশংকা প্রকাশ করে বলেন, তাতিকোনা এলাকায় আসন্ন শারদীয় উৎসব পালন করা নিয়ে তারা শংকিত রয়েছেন। মামলার আসামী ও প্রভাবশালী গোষ্ঠির ভয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকেই এখন বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিষয়টি মানবেতর হওয়ায় আসামীদের গ্রেফতার এবং দেশের প্রচলিত আইনে বিচার নিশ্চিত করার দাবী জানান বক্তারা। মুক্তিযোদ্ধা স্বরাজ কুমার দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মুক্তিযোদ্ধা কেতকী রঞ্জন চৌধুরী ভানু, ব্যবসায়ী কালীকান্ত দাস, বাবুল চৌধুরী, শিক্ষক প্রনব দাস, রিপন ভট্টাচার্য্য, মিটুু রমেন্দ্র নারায়ন দাস, রথীন্দ্র কুমার দাস, দিপু ভট্টাচার্য্য, অঞ্জন দাস, নুপুর দাস, পবলু দাস, রবি মালাকার, দুলাল চক্রবর্ত্তী, দীনবন্ধু সরকার, দিগই মালাকার, ভানু লাল দাস, শীতেষ মালাকার, বিলাস চক্রবত্তী, প্রদীপ দাস, অবনী মোহান দাস, সন্দীপ বৈদ্য, শ্যাম দাস, গোবিন্দ মোহান সরকার, হিরু দাস, অপু চন্দ্র শীল, অনিক কর্মকার,অসীম কর, অমর কর, ময়না দাস, তাপস দাসসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েক শতাধিক লোকজন উপস্থিত ছিলেন।