ছাতক প্রতিনিধিঃ
ছাতকে ফের বন্যায় প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। ওই নিয়ে এখানে চারবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এখানের কৃষক। গত এক সপ্তাহ ধরে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে জমির পর জমি। চতুর্থ বারের মতো অকাল বন্যায় হাজার-হাজার একর রোপা আমন ধান ও বীজতলা তলিয়ে গেছে। নিস্ব হয়ে পড়েছেন এখানের কৃষকরা। তৃতীয় দফা বন্যায় এখানের সকল বীজতলা তলিয়ে যায়। বন্যা শেষে কৃষকরা সরকারি ও বেসরকারিভাবে বীজ সংগ্রহ করে রোপা আমন ধানের চাষাবাদ করেছিলেন। চলতি এ বন্যায় রোপনকৃত সকল রোপা আমন ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছেন। সুরমা, পিয়াইন ও চেলা নদীসহ উপজেলার সকল নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যেকোনো সময় ছাতকের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশংকা রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার নি¤œাঞ্চল এলাকার অনেক ঘর বাড়ি ও রাস্তাঘাটে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। নি¤œাঞ্চল এলাকার একাধিক মৎস্য খামারও তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে। ইতিমধ্যে বেশীরভাগ ইউনিয়নেরই গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় অনেকস্থানে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসেব অনুযায়ী শনিবার বিকেল পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার ১১৫ সেঃমিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে উপজেলা সদরের সাথে সকল ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। ইসলামপুর ইউনিয়নের নিজগাঁও গ্রামের জাহাঙ্গির আলম রাসেল জানিয়েছেন, ইউনিয়নের হাজারো পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। সারা ইউনিয়নের রোপা আমন ধান ও বীজতলা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এখানে নদী ভাঙ্গনও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। কালারুকা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুস সত্তার ও উত্তর খুরমা ইউনিয়নের কৃষক আজাদ মিয়া জানান, তাদের রোপনকৃত সকল ক্ষেত বন্যার পানিতে বিনষ্ট হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তৌফিক হোসেন খান জানিয়েছেন, উপজেলায় ১৩ হাজার ১শ ১৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষাবাদ হয়েছিল। এ বন্যায় অধিকাংশ জমির ক্ষেত তলিয়ে গেছে। দ্রুত বন্যার পানি কমে গেলে ক্ষতির পরিমান অনেকটা কমে আসবে বলে তিনি জানিয়েছেন।