স্টাফ রিপোর্টার::
বিপ্লবী চে গুয়েভারা ও বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের কিংবদন্তী কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদের প্রয়াণ দিবসে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ১২ জেলা ছাত্র ইউনিয়নের কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা কমিউনিস্ট পার্টি’র (সিপিবি) সভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার’র সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এনাম আহমেদ’র সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা যুব ইউনিয়নের সভাপতি আবু তাহের মিয়া, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি দুর্যোধন দাস দুর্জয়, সাধারণ সম্পাদক আসাদ মনি। এসময় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক পাপ্পু সরকার, কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নিমাই সরকার, সুনামগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব, ছাত্র নেতা গাজী মিয়া প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ১৯২৮ সালে ১৪ জুন চে জন্ম গ্রহণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি মোটর সাইকেলে দক্ষিণ আমেরিকা ভ্রমণের সময় প্রত্যন্ত অঞ্চলে কৃষকের চরম দারিদ্রতা দেখে মর্মাহত হন। বিপ্লবী চে মনে করতেন একচেটিয়া পুঁজিবাদ ও সা¤্রাজ্যবাদের একমাত্র সমাধান হল বিশ্ব বিপ্লব। কিউবা বিপ্লবে চে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অপর দিকে কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদ ৬২’র গণ আন্দোলণ, মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া সর্বশেষ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন।
বক্তারা স্মৃতিচারণ করে বলেন, কমরেড ফরহাদ শ্রমজীবী মানুষের মুক্তিসংগ্রামের নেতা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ যে হতে পারে, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে দেওয়ার পর্বটি স্বাভাবিক হবে না- এমন ধারণা তার ছিল। ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তান নৌবাহিনীতে কর্মরত আব্দুর রউফ ঢাকায় এসে গোপনে বৈঠক করে গিয়েছিলেন মোহাম্মদ ফরহাদের সঙ্গে। ১ মার্চ ১৯৭১-এ যে কিছু একটা ঘটতে পারে- তা তিনি ছাত্র ইউনিয়নের নেতাদের আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। ২৫ মার্চ ১৯৭১, সহকর্মী সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। স্পষ্ট করে বলে দেন- সন্ধ্যার পর পাকিস্তানি বাহিনী হত্যাযজ্ঞ চালাতে পারে। ঠিকই সংঘটিত হয়েছিল গণহত্যা।
এছাড়াও ১৯৮৩ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে এরশাদের শিক্ষানীতিবিরোধী আন্দোলনের সময় তাকে তুলে নিয়ে ১৪ দিন ক্যান্টনমেন্টে নির্যাতন চালান জেনারেল এরশাদ। শেখ হাসিনাকে সামনে রেখে ১৫ দল আর খালেদা জিয়াকে সামনে রেখে ৭ দলীয় জোট গঠন এবং গণতন্ত্রের দাবিতে পাঁচ দফা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। ১৯৮৭ সালের ৯ অক্টোবর তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের রাজধানী মস্কোতে এই মহাজীবনের অকস্মাৎ অবসান ঘটে এই বিপ্লবীর। দেশের বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বর্তমান কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদের মতো নেতার বড় বেশি প্রয়োজন বলে বক্তারা মনে করেন।