বিশেষ প্রতিনিধি::
দেশের রাজনীতির সঙ্গে এখন আর সম্পর্ক নেই কিন্তু প্রবাসে সক্রিয় আছেন এমন নেতারা সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে স্থান পেতে তদবির শুরু করেছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের গুনগান গেয়ে তাদের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ সাইটে লিখছেন। পদপ্রত্যাশী প্রবাসী এসব নেতারা দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন স্থানীয় নেতাদেরও। তাছাড়া নানাভাবে তদ্বিরও অব্যাহত রেখেছেন। যে কোন মূল্যেই তারা জেলা কমিটিতে থাকতে স্থান নিশ্চিত করতে চান বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
জানা গেছে যুক্তারাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করেন সুনামগঞ্জের অনেক বাসিন্দা। তারা এখন সেখানে স্থায়ী নাগরিক হিসেবে স্বচ্ছল জীবন যাপন করছেন। কদাচিৎ দেশে আসলেও স্থানীয় রাজনীতিতে তাদের কোন সম্পৃকক্ততা নেই। তবে এবার জেলা কমিটিতে স্থান পেলে তারা রাজনীতিতে নিয়মিত হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
জানা গেছে প্রবাসী এসব নেতারা এখন ঘনঘন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সেক্রেটারির সঙ্গে ফোনো যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। অনেকে তাদের সন্তুষ্ট করে সামাজিক যোগাযোগ সাইটে গুণকীর্তনও করছেন। প্রবাসীদের এমন জগজম্পে মাঠের রাজনীতিতে ত্যাগী ও স্থানীয় নেতারা হতাশা ব্যক্ত করে কমিটিতে স্থানীয়দের অগ্রাধিকার দাবি করেছেন।
প্রবাসী এসব নেতাদের তব্দিরে হতাশ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তারা মনে করেন এলাকায় যোগাযোগ না থাকার পরও যারা সাত সাগর তের নদীর ওপারে স্থায়ীভাবে সপরিবারে বসবাস করে আওয়ামী লীগের স্থানীয় রাজনীতিতে যুক্ত হতে চাওয়া অনুচিত। কারণ এসব নেতারা কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত হলে রাজপথের আন্দোলনে তারা অনুপস্থিত থাকবেন। এতে সাংগঠনিকভাবে দলটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তারা দাবি জানিয়েছেন যারা সার্বক্ষণিক দেশে থেকে রাজপথে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত আছেন তাদের নেতৃত্বেই যেন জেলা কমিটি গঠিত হয়। প্রবাসী নেতাদের তারা প্রবাসে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত থেকে আন্তর্জাতিকভাবে দলের শক্তি বাড়ানোর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি মোবারক হোসেন বলেন, সংগঠন কিভাবে পূর্ণাঙ্গ রূপ পেলে শক্তিশালী হবে সেটার সিদ্ধান্ত নিবেন সভানত্রেী শেখ হাসিনা এবং জেলার সভাপতি ও সেক্রেটারি। তবে তৃণমূল নেতা হিসেবে আমরা আশা করি যারা স্থায়ীভাবে মাঠে থেকে রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় থাকেন, দলের প্রতি সময় দেন, ত্যাগ স্বীকার করেন তাদেরকেই স্থান দেওয়া উচিত। দলের দুঃসময়ে এবং জরুরি কর্মসূচি বাস্তবায়নের সময় যারা মাঠে থাকবেন তাদের মূল্যায়ন হলে দলের জন্য ভালো। তবে প্রবাসী নেতাদেরও যারা দেশে আসলে দলে সময় দেন তাদেরও মূল্যায়নের ব্যাপারে জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধান্ত নিবেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন বলেন, যারা দেশে থেকে সার্বক্ষণিকভাবে রাজনীতি করছেন তাদেরকেই আসন্ন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান দেওয়া হবে। দলীয় সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদকের পরামর্শক্রমে আমরা প্রবাসের সক্রিয় নেতাদেরও স্থান দেওয়ার কথা ভাবছি। তবে শেষ পর্যন্ত দেশে অবস্থানকারী নেতারাই অগ্রাধিকার পাবেন।