স্টাফ রিপোর্টার::
গত চারদিনের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে উন্নয়ন বোর্ড নির্মিত বাধ ভেঙ্গে, বাধ উপচে জেলার ৭ উপজেলার ১০ হাওরের প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির উঠতি বোরো ধান তলিয়ে গেছে। ঝ্ুঁকিতে রয়েছে ১৩৩ হাওরের কাচা বোরো ধান। গত ২৯ মার্চ থেকে জেলায় মাঝারি বৃষ্টি চলছে। এতে নদ-নদী খাল বিলের পানি বেড়ে চলছে। গতবার অর্ধেক ফসলহারানো এবার পুরো ফসল নষ্ট হওয়ায় আশঙ্কা করছে। স্থানীয় কৃষকরা বাধরক্ষায় স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করলেও পানি আটকাতে পারছেনা।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে চলতি বোরো মওসুমে জেলায় ২লাখ ১৫ হাজার ৮১৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হলেও ফলন হয়েছে ২লাখ ২৩হাজার ৮২ হেক্টর জমিতে। ধান পাকতে আরো ১৫-২০দিন সময় লাগবে। কিন্ত এর মধ্যেই গত চারদিনের মাঝারি বৃষ্টিতে জেলার ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা, বিশ্বম্ভরপুর, জগন্নাথপুর ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ১০টি হাওরের ফসল তলিয়ে গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাধ ভেঙ্গে এবং বাধে মাটি না দেওয়ায় সেই বাধ দিয়ে পানি ডুকে চন্দ্রসোনার তাল, সাথারিয়া, পাথারিয়া, বরাম হাওর, কাইক্কার ধার হাওর, ডুবাইল হাওর, নলুয়ার হাওর, পাগনার হাওর, করচার হাওরসহ ১০ হাওরের ৫ হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণ অব্যাহত থাকায় জেলার ১৩৩ হাওরের কাচা বোরো ফসল সম্পূর্ণ ঝুকিতে রয়েছে। এ বছর আগাম বৃষ্টি ও ঢল নামায় কাচা ফসল তলিয়ে যাওয়ায় ফসল হারিয়ে বিলাপ করছে হাওরপাড়ের কৃষক। অনেক স্থানে পানি আটকাতে কৃষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করলেও পানি আটকাতে পারছেননা।
জানা গেছে ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৪৮টি হাওরের বোরো ফসলরক্ষা বাধের কাজ মেরামত, সংস্কার ও নতুন বাধ নির্মাণে ৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছিল। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরুর কথা থাকলেও কাজ শুরু হয়েছিল এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। ফলে এখনো বাধের কাজ শেষ হয়নি। কোন কোন বাধে এখনো মাটি ফেলা হয়নি। এসব কারণে হাওরের ফসলহানি হয়েছে বলে কৃষকরা জানান। সময় মতো বাধে মাটি পড়লে ফসলহানি এড়ানো যেতো বলে জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জাহেদুল হক বলেন, কাচা ফসল তলিয়ে যাওয়ায় এবার কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ বেশি হবে। অধিকাংশ স্থানেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাধ ভেঙ্গে হাওরে পানি ঢুকে ফসলহানি ঘটাচ্ছে। বৃহষ্পতিবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ১০ হাওরের ফসল তলিয়ে গেছে। অন্য হাওরও ঝূকিতে রয়েছে বলে তিনি জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আফসর উদ্দিন বলেন, পাহাড়ি ও ঢল বৃষ্টিতে হাওরের কাচা ফসল তলিয়ে নিচ্ছে। দোয়ারাবাজারে একটি বাধ দুষ্কৃতিকারীরা কেটে দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই পানি দ্রুত হাওরে নামছে। এতে ফসল হুমকিতে আছে।