মৌলভীবাজারের মাধবকুন্ড জলপ্রপাত কিংবা সিলেটের বিছনাকান্দি। ছড়ার জলে পাথরের খাঁজে আটকে আছে কোক-পেপসির খালি বোতল। সুন্দরবনের দুবলারচর বা কক্সবাজারের ইনানী। সমুদ্রসৈকতে বালিমাটিত আটকা পড়েছে কোক-পেপসির খালি বোতল। সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর কী রাঙামাটির সাজেক পাহাড়। ছড়ানো-ছিটানো কোক-পেপসির বোতল। বিল কী বরেন্দ্র বা ঢাকার কাটাশুর খাল। জলধারা আটকে আছে কোক-পেপসির বোতলের স্তুূপ। দেশজুড়ে এখানে সেখানে প্লাস্টিক বোতল, প্যাকেট আর মোড়কের ভাগাড়। এত প্লাস্টিক আসে কোথা থেকে? কারা বানায়? কী থাকে এসব প্লাস্টিকের মোড়ক আর ধারকে? যা থাকে তা না খেলে, ব্যবহার না করলে কী জীবন বরবাদ হয়ে যায়? না যায় না। কারণ এসব মোড়ক ও ধারকে যা থাকে তা খাদ্য, পানীয় কী প্রসাধন হলেও এসব না ব্যবহার করেও দুর্দান্ত এক স্বাস্থ্যকর দীর্ঘজীবন পাড়ি দেয়া যায়। তাহলে এত পণ্য যায় কোথায়? আর এর বহুল ব্যবহারই যদি না হয় তবে এইসব পণ্য এত প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরিই করে বা কীভাবে? শোনা যায়, ক্ষুধা নিবারণ বা পুষ্টি নয়, এসব গিলতে হয় ¯্রফে কৃত্রিম স্ট্যাটাস রক্ষার ঠেলায়। কোক-পেপসি না হলে নাকি ‘স্মার্টনেসের জাত যায়’! আর ঘাম ঝরিয়ে এই ‘জাত-কূল’ বাঁচাতে পৃথিবী হয়ে ওঠছে বিপদজনক প্লাস্টিক বর্জ্যরে ভাগাড়। এইসব করপোরেট কোম্পানির মাধ্যমেই সবচে বেশি প্লাস্টিক দূষণ ঘটছে। এই প্লাস্টিক কেবল মাটি, পানি, বাতাসের জন্য বিপদজনক নয়। মানুষসহ প্রাণ-প্রকৃতিতেও নির্দয়ভাবে ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক। আমাদের খাদ্যশৃংখলের ভেতরও প্রবেশ করছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। প্লাস্টিক বিরোধী আন্তজার্তিক পরিবেশ সংগঠন ‘ব্রেক ফ্রি ফ্রম প্লাস্টিক’ করপোরেট প্লাস্টিক দূষণ বিষয়ক তাদের তৃতীয় সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ২০২০ সনের ২ ডিসেম্বর। এই সমীক্ষা তৃতীয়বারের মতো প্রমাণ করেছে কোক-পেপসি এবং নেসলের মতো বহুজাতিক কোম্পানির মাধ্যমেই দুনিয়ায় ভয়াবহ প্লাস্টিক দূষণ ঘটছে। করোনাকালে এই তথ্য দুনিয়াকে কী আলাদা কোনো বার্তা জানায়? লকডাউন হয়ে থাকা দুনিয়াকে খাদ্য কী পানীয় দিয়ে এইসব কোম্পানিরা কী বাঁচিয়েছিল? নাকি মানুষ এদের পণ্য ব্যবহার না করে শুকিয়ে মরে গিয়েছিল। করোনাকাল প্রমাণ করেছে এইসব করপোরেট পণ্যসর্বস্ব ভোগবিলাসিতা কত মিথ্যা। কত অদরকারি। বরং এই মিথ্যে পণ্যসর্বস্বতা প্লাস্টিক দূষণে নাজেহাল করছে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য। কেবল প্লাস্টিক নয়, এসব করপোরেট কোম্পানির পণ্যে সরাসরি বিষ থাকার বিষয়টিও প্রমাণিত হয়েছে বহুবার। তারপরও থামেনি দূষণের বাণিজ্য। তৈরি হয়নি এক বিঘত সামাজিক দায়বদ্ধতা।
সাড়ে তিন লাখ নমুনা কী ভুল?
প্লাস্টিকের বিরোধী আন্তজার্তিক পরিবেশ সংগঠন ‘ব্রেক ফ্রি ফ্রম প্লাস্টিক’ করপোরেট প্লাস্টিক দূষণ বিষয়ক তাদের তৃতীয় সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ২০২০ সনের ২ ডিসেম্বর। ‘ ইৎধহফবফ ঠড়ষ ওওও: উবসধহফরহম ঈড়ৎঢ়ড়ৎধঃব অপপড়ঁহঃধনরষরঃু ভড়ৎ চঁনষরপ চড়ষষঁঃরড়হ” শীর্ষক প্রতিবেদনে দেখা যায়, দশাসইসব খাদ্য-পানীয়-প্রসাধন কোম্পানির মাধ্যমেই সবচে বেশি প্লাস্টিক দূষণ ঘটছে। পৃথিবীর ৫৫টি দেশ থেকে প্রায় পনের হাজার স্বেচ্ছাসেবী তিন লাখ ৪৬ হাজার ৪৯৪টি প্লাস্টিক নমুনা সংগ্রহ করেন। দেখা গেছে, এগুলো প্রায় সবই কোনো না কোনো কোম্পানির পণ্যের বোতল, মোড়ক ও ধারক। দেখা গেছে, কোকোকোলা, পেপসিকো ও নেসলের মাধ্যমে সবচে বেশি প্লাস্টিক দূষণ ঘটছে। পরপর তিনবারের মতো এরাই পৃথিবীর শীর্ষ প্লাস্টিক দূষণকারী কোম্পানি। এবারো ১৩, ৮৩৪ টি প্লাস্টিক খন্ডে কোকাকোলা, ৫,১৫৫ খন্ডে পেপসিকো এবং ৮৬৩৩ খন্ডে নেসলের ব্র্যান্ড লোগো পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে চিহ্নিত শীর্ষদশের অন্য প্লাস্টিক দূষণকারী কোম্পানিরা হলো: ইউনিলিভার, মনডেলেজ ইন্টারন্যাশনাল, মারস, প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল, ফিলিপ মরিস, কোলগেট-পালমোলিভ এবং পারফেট্টি। প্রতিবেদনটি পুরোটা চাইলে অনলাইনে দেখা যেতে পারে: যঃঃঢ়ং://িি.িনৎবধশভৎববভৎড়সঢ়ষধংঃরপ.ড়ৎম/ঢ়ি-পড়হঃবহঃ/ঁঢ়ষড়ধফং/২০২০/১২/ইঋঋচ-২০২০-ইৎধহফ-অঁফরঃ-জবঢ়ড়ৎঃ.ঢ়ফভ। এইসব প্লাস্টিক নমুনা ৫১টি দেশের সমুদ্র সৈকত, নদীতট, উদ্যান, প্রাকৃতিক পরিবেশ ও অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অবস্থায় সংগ্রহ করা হয়েছে। এই সাড়ে তিন লাখ প্লাস্টিক নমুনা নিশ্চয়ই ভুল নয়। পনের হাজার স্বেচ্ছাসেবী নিশ্চয়ই কোনো মিথ্যা গল্প ফাঁদেননি। ২০১৯ সনে ৫১টি দেশে জরিপটি করা হয় এবং দেখা যায় ৩৭টি দেশে কেবল কোকাকোলার মাধ্যমেই সবচে বেশি প্লাস্টিক দূষণ ঘটে। টিয়ারফান্ডের অপর একটি সমীক্ষা জানায়, ছয়টি উন্নয়ণশীল দেশে পাওয়া ৫ লাখ প্লাস্টিক বর্জ্যের জন্য কোক-পেপসি ও নেসলে দায়ী। প্রতি বছর পৃথিবীতে উৎপন্ন ৯১ শতাংশ প্লাস্টিক পুন:ব্যবহৃত না হয়ে পরিবেশে বিপদজনক বর্জ্য হিসেবে জমা হয়।
কার ক্ষমতায় বাড়ে প্লাস্টিক?
পলিথিন এক জ্যান্ত পুঁজিবাদী পাপ। নয়াউদারবাদী বাণিজ্য সামাজ্যের দু:সহ ক্ষত হিসেবে পলিথিন এ সভ্যতাকে গলা টিপে ধরছে বারবার। ১৯৩৩ সনে এই পলিমার পণ্য আবিষ্কৃত হলেও ১৯৫৮ সন থেকে ভোক্তার ক্রয়সীমানা দখল করে নেয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের সূত্রমতে, ১৯৮২ সনে বাংলাদেশে পলিথিন বাজারজাতকরণ ও ব্যবহার শুরু হয়। পলিথিন গলে না, মিশে না, পচে না। ৫০০ থেকে হাজার বছরে এটি আবারো প্রকৃতিতে রূপান্তরিত হয়। ২০০২ সনের এক সমীক্ষা অনুযায়ী ঢাকা শহের প্রতিদিন একটি পরিবার গড়ে চারটি পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করতো। পরিবেশ অধিদপ্তরের মতে, ১৯৯৩ সনে বাংলাদেশে দৈনিক ৪৫ লাখ পলিথিন ব্যাগ ব্যবহৃত হতো, ২০০০ সালে ৯৩ লাখ। দুনিয়ায় প্রতিবছর প্রায় ৬০ মিলিয়ন টন পলিথিন সামগ্রি তৈরি হয়। ১৯৯৫ সনের পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ৬(ক) (সংশোধিত ২০০২) ধারা অনুযায়ী ২০০২ সনের ১ জানুয়ারি ঢাকা শহরে এবং একই সনের ১ মার্চ বাংলাদেশে পলিথিন নিষিদ্ধ করা হয়। পলিথিন নিষিদ্ধকরণ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, …যেকোনো প্রকার পলিথিন ব্যাগ অর্থাৎ পলিথাইলিন, প্রলিপ্রপাইলিন বা উহার কোনো যৌগ বা মিশ্রণের তৈরি কোনো ব্যাগ, ঠোঙা বা যেকোনো ধারক যাহা কোনো সামগ্রী ক্রয়বিক্রয় বা কোনো কিছু রাখার কাজে বা বহনের কাজে ব্যবহার করা যায় উহাদের উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন, মজুদ, বিতরণ, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিবহন বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার দেশে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হইল। প্রজ্ঞাপনে বিস্কুট, চানাচুরসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য, ওষুধ, সিমেন্ট, সার সহ ১৪টি পণ্যের ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০০২) এর ১৫(১) অনুচ্ছেদের ৪(ক) ধারায় পলিথিন উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাতকরণের জন্য অপরাধীদের সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ৬ মাসের কারাদন্ডের বিধান আছে। আইন অনুযায়ী ১০০ মাইক্রোনের কম পুরুত্বের পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ। আইন অমান্যকারীর জন্য ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। বাজারজাতকরলে ৬ মাসের জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা। মাঝেমধ্যে এ আইন মেনে ভ্রাম্যমাণ আদালত ‘লোকদেখানো’ কিছু জরিমানা আর অভিযান চালালেও পলিথিন থামছে না। প্লাস্টিক-পলিথিন যেন আইন, বিচারকাঠামো, সরকার, রাষ্ট্র সবকিছুর চেয়ে শক্তিময় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাষ্ট্র যতই দরদী হোক, পরিবেশ আইন করুক বহুজাতিক কোম্পানি এসব পাত্তা দেয় না। ২০১০ সনে ভয়ংকর বীজ-প্রতারণার জন্য সিনজেনটার বিচার করা যায়নি। সীসা থাকার পরও বন্ধ হয়নি নেসলের ম্যাগী নুডলস।
কোক-পেপসির বিষ!
সেন্টার ফর সায়েন্স এন্ড এনভায়রনমেন্ট (সিইসি) ২০০৩ সালে ১১ টি কোকাকোলা ও পেপসি ব্র্যান্ড নিয়ে একটি গবেষণা করে দেখিয়েছেল ওইসব পানীয়তে কীটনাশকের পরিমান অনেকগুণ বেশী। ২০০৬ সনে আবারো তারা ভারতের ১২টি রাজ্যে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখিয়েছেন কোকাকোলা ও পেপসিতে ৫ ধরনের কীটনাশক রয়েছে। ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড(বিআএ্স) এর নির্ধারিত মাত্রার তুলনায় পেপসিকোলায় এর পরিমান ৩০ গুণ বেশী এবং কোকাকোলায় এর পরিমান ২৫ গুণ বেশী। সিইসি কোক-পেপসির ৫০ শতাংশ বোতলেই ম্যালাথিয়ন বিষ পেয়েছেন। এই বিষ শহরের মশা ও পোকামাকড় মারার জন্য ব্যবহৃত হয়। কয়েকফোঁটা ম্যালাথিয়ন বিষ ঘাসের উপর ফেলে দিলে ঘাস জ্বলে পুড়ে বিকৃত হয়ে যায়। ম্যালাথিয়ন বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করার সংখ্যাও অনেক। এছাড়াও লিন্ডেন, হেপ্টাক্লোর, ক্লোরপাইরিন এই বিষগুলোও কোক-পেপসিতে পাওয়া গেছে। কেবলমাত্র কোকোকোলা বা পেপসিকো নয়, নেসলের পিওরলাইফ, পেপসিকোর অ্যাকোয়াফিনা, পার্লের বিসলারি পানিতেও পাওয়া গেছে এইসব ভয়াবহ বিষ। এরপর ভারতের অনেক অঞ্চলে কোক-পেপসি নিষিদ্ধ হয়েছিল। প্রশ্ন জাগে বাংলাদেশের কোক-পেপসিতে কী কোনো বিষাক্ত কিছু নেই? এই পানীয় কি স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ? একটা অদরকারী পানীয় যা কেবল জনস্বাস্থ্য নয়, প্লাস্টিক দূষণের মাধ্যমে প্রতিবেশের স্বাস্থ্যহানিও ঘটাচ্ছে, তাহলে এই পণ্যমানসিকতা বহাল রাখবার দরকার কী?
ম্যাগী নুডলস কী নিরাপদ?
কে জানে বাংলাদেশের ম্যাগী নুডলস কতটা নিরাপদ? ভারতের উত্তরপ্রদেশের ফুড সেফটি ্এ্যান্ড ড্রাগ এ্যাডমিনিস্ট্রেশন (্ফএসডিএ) ২০১৫ সনের মার্চে নেসলের ম্যাগী নুডলসে উচ্চমাত্রার সিসা ও মনো-সোডিয়াম গ্লুটামেট (এমএসজি) পায়। পাশাপাশি সেন্টার ফর সায়েন্স এন্ড এনভায়রনমেন্ট (সিইসি) এর গবেষণাতেও ম্যাগী নুডলসে উচ্চ মাত্রার লবন ও ট্রান্স-ফ্যাট পাওয়া যায়। ২০১৫ সনের ২০ মে ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্য ম্যাগী নুডলস প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। পরবর্তীতে অন্যান্য রাজ্যও এ ঘোষণা দেয় এবং ভারতে নিষিদ্ধ হয় ম্যাগী নুডলস। ম্যাগী নুডলসের উৎপাদক নেসলে কোম্পানিও ভারতে তাদের ৫ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য ধ্বংসের ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়। ভারতে ম্যাগী নুডলসে বিপদজনক উপাদান খুঁজে পেলেও বাংলাদেশ এক্ষেত্রে নিশ্চুপ। দীর্ঘ নিশ্চুপতার পর রহস্যময়ভাবে খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট (বিএসটিআই)’ বাংলাদেশের ম্যাগি নুডলসে মাত্রাতিরিক্ত লবন ও সিসা না পাওয়ার ঘোষণা দেয়। বিএসটিআই দেশের বাজারে বিক্রি হওয়া ম্যাগী নুডলসে ২ পিপিএম মাত্রার সীসা পেয়েছে, যা সহনীয় (সূত্র: দ্যরিপোর্ট২৪ডটকম, ২ জুন ২০১৫)। অপরদিকে বিএসটিআই সূত্র বলছে, সাধারণ নুডলসে সিসা পরীক্ষার প্যারামিটার থাকলেও ইনস্ট্যান্ট নুডলসের ক্ষেত্রে নেই (সূত্র: বণিক বার্তা, ১৬/৬/২০১৫)। কেবল প্যাকেটের ভেতরের উপাদান নিয়ে আশংকা নয়, এসব খাদ্যপণ্যের মোড়ক কী পরিমাণে প্লাস্টিক দূষণ ঘটাচ্ছে তাও আলাপে টানা জরুরি।
বাছাই করবার স্বাধীনতা!
কোক-পেপসি কী ম্যাগী নুডলসই একটা প্রজন্মের সামনে জোর করে ছুড়ে দেয়া হয়েছে। এই প্রজন্মকে এসব ছুড়ে দেয়া লোভনীয় পণ্যের বিপদ ও দূষণ বিষয়েও সবটা জানানো দরকার। বহু গবেষণা আছে। সামাজিক অভিজ্ঞতা আছে। কোক-পেপসির মতো বহুজাতিক কোম্পানি জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশকে চুরমার করে দেয়। নতুন প্রজন্মকে তাই নিজের মতো করে বাছাই করবার প্রস্তুতি নিতে হবে। গ্রহণ কী বর্জনের স্পর্ধা অর্জন করতে হবে। একদিকে কোক-পেপসির বানানো ঝকমারি আরেকদিকে একটা দূষণ আক্রান্ত পৃথিবী। কাকে বুকে আগলে দাঁড়ানো জরুরি তা এই প্রজন্মকেই ঠিক করতে হবে। আশা করি নতুন প্রজন্ম এই নয়াউদারবাদী বাজারকে প্রশ্ন করবে। বিষ আর প্লাস্টিক দূষণ থেকে বাঁচাবে স্বদেশ। জাগিয়ে রাখবে বিষ কী প্লাস্টিকমুক্ত একটা তরতাজা গ্রহ।
পাভেল পার্থ। লেখক ও গবেষক। animistbangla@gmail.com