স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের হাওরের একমাত্র বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ার ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ, ঘেরাও কর্মসূচি, মানববন্ধন, সাংবাদিক সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কর্মসূচিতে কৃষকরা সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার সকাল ১১ টায় সুনামগঞ্জ ‘হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন’ শহরের পৌরবিপনী এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি দিয়ে আলফাত স্কয়ারে প্রতিবাদ সমাবেশে করে। পরে সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবরে হাওররক্ষাবাধের কাজে নিয়োজিত পিআইসি ও ঠিকাদারদের অবশিষ্ট বিল বন্ধ রাখার জন্য লিখিত আবেদন করেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষাণা করা, ফসল রক্ষা নির্মাণে বাঁধে অনিয়ম ও দুর্নীতিবাজদের তালিকা তৈরী করে শাস্তি প্রদান, ভরাটকৃত নদী ও বিল খনন করা এবং বাজার মনিটরিং করার জোড়ালো দাবি জানান।
দুপুর ১ টায় সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবিতে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা পরিষদ ও সুনামগঞ্জ পৌরসভা। শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাঠাগার মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট। তিনি জরুরী ভিত্তিতে সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবির পাশাপাশি তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত দুর্নীতিবাজ পাউবোর কর্মকর্তা, পিআইসি, ঠিকাদারদের চিহ্নিত করা, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সারা বছর ১০ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরিসহ হাওর ও কৃষি উন্নয়নে নদী ও খাল খনন বাস্তবায়ন করাসহ নানা দাবি উত্থাপন করেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আয়ুব বখত জগলুল।
এদিকে জামালগঞ্জের হালির হাওরের বাঁধ ভেঙ্গে ফসল ডুবির ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মত বুধবার দুপুরে কয়েক হাজার কৃষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস ঘেরাও করে পাউবোর দুর্নীতিবাজ পিআইসি ও ঠিকাদারদের শাস্তির দাবিতে শ্লোগান দেয়। সমাবেশে বক্তারা দুর্গত এলাকা ঘোষণা, দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দাবিসহ কৃষকদের কাছে সরকারি-বেসরকারি ও এনজিও সংস্থার ঋণ আদায় বন্ধ ও ঋণের সুদ মওকুফ করার দাবি জানান। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় রেশনিং প্রথা চালু করা ১০ টাকা কেজি মূল্যে চাল বিক্রির দাবিও জানান তারা।
এদিকে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত জেলায় আরো প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান তলিয়ে গেছে। বর্ষণ বন্ধ হলেও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত রয়েছে। বুধবার বিকেলে সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি ৮.৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ডিজি মো. মনজুরুল হান্নান সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ১৫টি হাওর পরিদর্শন করেছেন।