বিশেষ প্রতিনিধি::
দলিত সম্প্রদায়ের শ্রমজীবী নারী রেখা বাল্মিকী। ষাটোর্ধ এই নারী কখনো সার্কিট হাউসে চেয়ারে বসার সুযোগ পাননি। বেদে সম্প্রদায়ের তিরিশোর্ধ নারী তাহেরারও একই অভিজ্ঞতা। হিজড়া সম্প্রদায়ের কালা মিয়ারও একই অভিজ্ঞতা। অনগ্রসর গোষ্ঠীর এই লোকজন এমন সুযোগ পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জের দলিত, হিজড়া, বেদে, প্রতিবন্ধীদের সার্কিট হাউসে ডেকে এনে আনুষ্টানিকভাবে মুজিব বর্ষের উপহার ও শীতবস্ত্র হাতে তুলে দিয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। সুযোগ দিয়েছেন তাদের কষ্টের কথা তুলে ধরার জন্য।
জীবনে প্রথম বারের মতো মাইক হাতে পেয়ে তারা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তারা। সজল চোখে মুজিব বর্ষের উপহার ও শীতবস্ত্র গ্রহণ করেন। এই সুযোগ দেওয়ায় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সমাজের মূলধারা থেকে পিছিয়ে থাকা অনগ্রসর গোষ্ঠীর লোকজন। মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জ সাকির্ট হাউসে জেলা প্রশাসন তাদের হাতে লাল সবুজ রঙের মুজিব বর্ষের লগো সম্বলিত ছাতা ও উন্নত কম্বল বিতরণ তুলেন দেয়া হয়। অনগ্রসর গোষ্ঠীর ১২০ জন লোকের হাতে উপহার তুলে দেন জেলা প্রশাসক।
দলিত সম্প্রদায়ের নারী রেখা বাল্মিকী বলেন, আমরা কখনো সার্কিট হাউসের ভিআইপি কক্ষে চেয়ারে বসার কথা চিন্তা করিনি। আজ সেই সুযোগ পেয়েছি। সঙ্গে উপহারও পেয়েছি। আমাদের মতো অনগ্রসর গোষ্ঠীর লোকজনও এই সুযোগ পেয়ে আবেগাপ্লুত ছিলেন। আমরা রাষ্ট্রের কাছে এটাই চাই।
মুজিব বর্ষের উপহার ও শীতবস্ত্র অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের সব মানুষ সমান মর্যাদা নিয়ে বসবাস করুক এটাই চান। দলিত, বেদে, হিজড়া, প্রতিবন্ধীসহ অনগ্রসর গোষ্ঠীর সবার জীবন মান উন্নয়নে তিনি নিরলস কাজ করছেন। তার কাছে কোন ভেধাভেদ নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ¯েœহছায়ামাখা ছাতার তলে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে নেওয়ার কাজ করব। কারণ দেশ গঠনে সবার অংশগ্রহণ জরুরি। আমরা এক ছাতার নিচে আবদ্ধ না হলে জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে পারবনা।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সমাজসেবা অধিদপ্তর সুনামগঞ্জ কর্মকর্তা সুচিত্রা রায়, সাংবাদিক শামস শামীম, প্রতিবন্ধী আব্দুর রাজ্জাক, মিজানুর রহমান প্রমুখ।