বিশেষ প্রতিনিধি::
জাতীয় সঙ্গীত বাজছে মাইকে। সম্মানে আসন থেকে দাড়িয়ে ওঠে নিজেরাও জাতীয় সঙ্গীতে কণ্ঠ ধরলেন। পুরো জাতীয় সঙ্গীত শেষ করে আবার আসনে বসলেন। পরে মঞ্চে এসেও মহান মুক্তিযোদ্ধা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করলেন। তারা এখন থেকে মাদরাসায় জাতীয় পতাকা সঠিক নিয়মে উত্তোলন ও শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনিয়ে দেশপ্রেমে উদবুদ্ধ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন কওমি মাদরাসার আলেমগণ।
এভাবেই ২৩ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমি হলে অনুষ্ঠিত বিশেষ অনুষ্ঠানে সঠিক মাপের স্ট্যান্ডসহ জাতীয় পতাকা, মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত বই উপহার গ্রহণ করেন সুনামগঞ্জ জেলার ২৭২টি কওমি ও আলিয়া মাদরাসার শিক্ষকরা। এ সময় মাদরাসা শিক্ষকরা একাত্তরে নীরিহ বাঙালিদের উপর প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে তিরিশ লাখ নীরিহ মানুষ হত্যা ও আড়াই লাখ মা বোনের সম্ভ্রম হরণের ঘটনায় পাকিস্তানীদের নিন্দা ও ঘৃণা জানান। নবী মোহাম্মদের কাছ থেকে দেশপ্রেমের শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মাদরাসার শিক্ষকরা। ওই অনুষ্ঠানে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে স্যন্ডসহ সঠিক মাপের জাতীয় পতাকা প্রদানের সঙ্গে জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সঠিক মাপের জাতীয় পতাকা সরবরাহকাজ সম্পন্ন করে জেলা প্রশাসন।
সুুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের সভাপতিত্বে ও সহকারি কমিশনার রিফাত উল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল বক্তব্য দেন মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ ও বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান। অনুষ্ঠানে অন্যদের বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, মাওলানা আলীনূর, মাওলানা আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
আলোচনা অনুষ্ঠানে মাওলানা আনোয়ার হোসেন বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ট সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্ম নিয়েছিলেন বলেই শোষক পাকিস্তানীদের কাছ থেকে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। এই স্বাধীনতা ধরে রাখতে আমরা ধর্ম-বর্ণ ভুলে সবাই দেশ গঠনের কাজে নিয়োজিত হবো। জাতির জনককে শ্রদ্ধা করেই আমাদেরকে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
হেফাজতে ইসলাম সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ও মদনিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল বছির বলেণ, আমরা জাতির জনককে অশ্রদ্ধা করিনা। তার ডাকে আমিও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলাম। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ট্রেনিং নিতে পারিনি। তাই মুক্তিযুদ্ধে যাওয়া হয়নি। তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করিনা। তিনি বলেন, আমরা আজ স্বাধীন দেশের প্রতীক জাতীয় পতাকা উপহার পেয়ে ভালো লাগছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, মহান মুজিব বর্ষ উপলক্ষে আজ ২৭২টি মাদরাসায় স্ট্যান্ডসহ সঠিক মাপের জাতীয় পতাকা প্রদানের মাধ্যমে জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা প্রদান করা সম্ভব হয়েছে। সকল মাধ্যমের শিক্ষাব্যবস্থার সংশ্লিষ্টরা সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ না করলে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না।