বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলাসহ এ সংক্রান্ত পৃথক ৫৪ টি মামলা আপোষে নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আদালত। তবে ১১ টি মামলায় গুরুতর অভিযুক্ত স্বামীদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে ৬৫ টি পৃথক মামলার একসঙ্গে দেওয়া রায়ে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই ব্যতিক্রমী এই আদেশ দেন। আদেশ পেয়ে অভিযুক্ত স্বামীরা স্ত্রীকে আদালত চত্বরেই ফুল দিয়ে বরণ করেন। সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পক্ষ থেকে ৫৪ দম্পতিকে আলাদাভাবে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়
জানা যায়, নারীনির্যাতন, যৌতুকসহ নানাভাবে নির্যাতিত সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার ৬৫ জন নারী সংসার থেকে বিচ্যুত হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে পৃথকভাবে মামলা দায়ের করেছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় অসহায় নারীরা শিশু সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন। অনাহারে অনেকে অন্যত্র আশ্রয় নিয়ে অনিশ্চিত এক জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এই অবস্থায় তারা চোখে অন্ধকার দেখছিলেন। এসব মামলার ৫৪ জন নারী ও তাদের স্বামীদের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেন আদালত। তাদের সম্মতিতে সন্তানদের বাবাদের জিম্মায় আবদ্ধ করে ব্যতিক্রমী আপোষমূলক রায় দেন বিচারক। রায়ে স্বামী-স্ত্রী সন্তানদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন ফিরে পায় ৬৫ মামলার মধ্যে ৫৪ টি মামলার পরিবার। বাকি ১১জন স্বামীকে দণ্ড দেন আদালত।
এটে ৫৪ টি দম্পতিকে পারিবারিক পূনঃমিলনের ব্যবস্থা করে দিলেন। ওই ১১টি পরিবারকে একত্রিত করতে না পারায় এবং নির্যাতিত স্ত্রী ও তাঁদের সাক্ষীরা স্বামীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ায় স্বামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। ফলে ১১ স্বামীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নান্টু রায় বলেন,‘ আদালত পৃথক ৬৫ টি নারী-শিশু নির্যাতন দমন মামলায় রায় দিয়েছেন। ১১ টি মামলায় ১১ জন স্বামীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করেছেন। তবে ৫৪টি মামলায় স্বামী-স্ত্রীকে আপোষের মাধ্যমে নিস্পত্তি করে দিয়েছেন। এর আগেও তিনি যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন। এভাবে যদি বিচারকার্য চলে এবং মামলার নিস্পত্তি হয় তাহলে বিচার ব্যবস্থার উন্নতি হবে। এবং বিচারপ্রার্থী জনগণ তাদের সুবিচার পাবে।
উল্লেখ্য গত বছরের ২৫ নভেম্বর একই আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন একদিনে পৃথক ৪৭ টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলায় ৪৭টি পরিবারকে আপোষের মাধ্যমে তাঁদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন। এনিয়ে মোট ১০১ টি পরিবার ধংসের হাত থেকে রক্ষা হল।