প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি বলেছেন, আমরা প্রতিটি জেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) স্থাপন করবো। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৭০ টি টিটিসি সেন্টার চালু করা হয়েছে।
হাওর ডেস্ক::
সোমবার (৮ মার্চ) দুপুরে নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকায় অনুষ্ঠিত নারী উদ্যোক্তা সম্মেলন ও পণ্য প্রদর্শনীর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, যারা বিদেশে যাবেন, তারা যাতে করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে যেতে পারেন- ইতিমধ্যে সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে, যারা বিদেশ থেকে আসছেন বা এদেশে থেকে যাবেন, এদেশের নাগরিক হিসেবে তারাও ভ্যাক্সিনেশনের আওতায় আসবেন।
এসময় মন্ত্রী আরও বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা সংশ্লিষ্ট দেশে যাতে ভ্যাক্সিনেশনের আওতায় আসে সে বিষয়টিও ভেবে দেখা যেতে পারে ; বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করা হবে।
সিলেট উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি স্বর্ণলতা রায়ের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ বেতারের ঘোষক জান্নাতুল নাজনীন আশার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরও বলেন, আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এখানে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। নারী-পুরুষ কাউকেই পেছনে ফেলে রাখা যাবে না। সকলকেই একসঙ্গেই হাঁটতে হবে। নারীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছেন। এদের মধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটছে। বিদেশ থেকে দু’জন ফেরত এলেও আরো ৯৮ জন ঠিকই উপার্জন করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই নারীরা যাতে দালালদের মাধ্যমে বিদেশ গিয়ে কষ্ট না করেন। দেশেই ৭০টি টিটিসি রয়েছে যাদের সাহায্যে নারী দক্ষতার সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশে গিয়ে কোনো ধরণের সমস্যা ছাড়া ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারেন। নারীদের পিছিয়ে রাখা একটি সমাজবিরোধী কাজ। বিশ্বের প্রায় ৫০ শতাংশই নারী। তাদেরকে রেখে কোনোভাবেই দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, নারীরা যাতে এগিয়ে যেতে পারে সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। ঘরে বাইরের বিষয় না দুটি হাতকেই কাজে লাগাতে হবে। প্রচলিত কুসংস্কার ও বাঁধাকে দূর করে সমাধান করে নারীদেরকেও এগিয়ে যেতে হবে। সকলের অংশগ্রহণে বাংলাদেশ সোনার বাংলা হবে।
সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মশিউর রহমান এনডিসি বলেন, বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে বিশাল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড জরুরী। পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও এই কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে হবে। নারীদেরকেও সার্বিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে হবে। এতে প্রচলিত ধ্যান ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. নিশারুল আরিফ বলেন, নারীদের ক্ষমতা ও নারীদের বঙ্গবন্ধু গুরুত্ব দিতেন। নারীদের যে সম্পদ থাকতে হবে সেই বিষয়েও তিনি গুরুত্ব দিতেন। বর্তমান সরকার নারীদের উন্নয়নে আন্তরিক। নারীদের নিয়ে সমাজে যেসব কুসংস্কার চলমান আছে সেই হীনমন্যতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নারী উদ্যোক্তাদের সফলতার কামনা করি।
স্বাগত বক্তব্যে সিলেট উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি স্বর্ণলতা রায় বলেন, আমরা সিলেটে এই প্রথম এমন আয়োজন করতে পেরে আবেগে উদ্বেলিত। সকলের ভরসা নিয়েই আমাদের আজকের এই শুরু। নারী উদ্যোক্তাদের মিলনমেলা নিয়েই আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবো।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, সিলেট-সুনামগঞ্জ সংরক্ষিত আসনের মহিলা সাংসদ অ্যাডভোকেট শামিমা আক্তার খানম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ এর সভাপতি আফজাল রশিদ চৌধুরী, বরিশাল উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি বিলকিস আহমেদ লিলি ও শেরপুর উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মনিজা মাসুদ।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের শুরুতে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্টির পক্ষ থেকে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
এছাড়া উদ্যোক্তার তিনটি ক্যাটাগরিতে প্রধান উদ্যোক্তা মিনারা বেগম, নির্ভীক উদ্যোক্তা ফারমিস আক্তার ও নবীন উদ্যোক্তা নুজাহাত ইসলাম রিয়াকেও বিশেষ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।