হাওর ডেস্ক::
কয়েক মাস আগে কলকাতায় একটি কালীপূজার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু করেছিল একটি বিশেষ গোষ্ঠী। তাদের উসকানিতে হুজুগে পড়ে মহসীন তালুকদার নামের এক ব্যক্তি ফেসবুক লাইভে এসে রামদা হাতে সাকিবকে খুনের হুমকি দেয়। বিষয়টি নিয়ে মিডিয়ায় তোলপাড় হলে মহসীনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সেই মহসীনের জামিন আবেদনের শুনানিকালে বিচারক ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মত প্রকাশ করেন।
আদালত বলেছেন, একজন বিশ্বমানের ক্রিকেটার কালীপূজায় নাকি মসজিদে যাবে, এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। এ জন্য কেউ তাকে হত্যার হুমকি দিতে পারে না। বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে হত্যার হুমকির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামি মহসীন তালুকদারকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েও রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর কলকাতায় গিয়ে একটি কালীপূজার অনুষ্ঠানে যান সাকিব আল হাসান। তিনি পূজা উদ্বোধন করেছেন বলে খবর বের হলেও পরে সাকিব এবং আয়োজকরা তা অস্বীকার করেন। সেই পূজার আয়োজক ছিলেন পরেশ পাল নামে তৃণমূল কংগ্রেসের এক রাজনৈতিক নেতা। ওই অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পৌর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের উপদূতাবাস তৌফিক হাসান, দূতাবাস প্রধান কনসুলার বি এম জামাল হোসেন প্রমুখ। এ নিয়ে খবর প্রকাশিত হলে একটি গোষ্ঠী শোরগোল তোলে।
এরপর ১৫ নভেম্বর রাত ১২টা ৭ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে চাপাতি দেখিয়ে সাকিবকে গলা কেটে হত্যার হুমকি দেয় মহসীন তালুকদার নামের ওই যুবক। মহসীন তালুকদার সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার ইউনিয়নের তালুকদার পাড়া গ্রামের আজাদ বক্সের ছেলে। বিপদ বুঝে ১৬ নভেম্বর মহসীন লাইভে এসে ক্ষমা চাইলেও জনগণের তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে ১৭ নভেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৬ নভেম্বরই সাকিব সোশ্যাল সাইটে এক ভিডিও প্রকাশ করে কালীপূজায় যাওয়ার জন্য ‘ক্ষমা চান’ এবং নিজেকে সাচ্চা মুসলিম দাবি করেন।