স্টাফ রিপোর্টার::
অসময়ের ঢল ও বর্ষণে একমাত্র ফসল গেছে। পরবর্তীতে ফসল পচে মারা গেছে হাওরের মাছ। দূষিত হয়েছে দৈনন্দিন ব্যবহারের পানি। এবার ঘূর্ণিঝড়ে সুনামগঞ্জের প্রায় ২০ হাজার হাজার পরিবারের মাথাগুজার ঠাইও উড়ে গেছে। বিদ্যুতের তার ছিড়ে ভেঙ্গে পড়েছে ৭০ খুটি। হেলে গেছে আরো ৬৭ খুটি। ৩৭২ পয়েন্টে ছিড়ে গেছে বিদ্যুতের তার। জেলার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা কাজ করলেও পূর্ণ লাইন চালু করতে আরো ৩-৪দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন।
প্রত্যক্ষদর্শী, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে রবিবার রাত সাড়ে ১০টার পর প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির পর রাত ১১.০৩ মিনিটে শুরু হয় প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়। ১১ টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের বেগ ছিল প্রবল। ঝড়ে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক, দোয়ারাজার ও তাহিরপুর উপজেলাসহ ৯ উপজেলার ঘরবাড়ি, গাছ-গাছালি, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ভেঙ্গে পড়ে। সুরমা নদীতে ঘাটে বাধা ত্রাণের নৌকা ২০টন চাল নিয়ে ডুবে গেছে। ঝড়ের তা-বে ভয় পেয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শহরতলির মল্লিকপুর এলাকায় সুরবালা দাস (৫৫) নামের এক নারী মারা গেছেন। এখনো নিখোজ রয়েছে হযরত আলী নামের আরেক যুবক।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯ উপজেলায় রবিবার রাতের ঘূর্ণিঝড়ে ২ হাজার ৮৮৮টি ঘর সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরো ৮ হাজার ৫৫২ টি ঘরবাড়ি। ক্ষয়-ক্ষতির চিত্র সোমবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে ক্ষতিগ্রসত লোকজন এখনো কোন সহায়তা পাননি। তবে বেসরকারি হিসেবে ঘরবাড়ি ধসে যাওয়ার পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার।
সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সেলিম ও পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার সোহেল পারভেজ বলেন, ঝড়ে আমাদের ৩৩ কেভি ও ১১ কেভি লাইনের খুটিসহ তার ছিড়ে গেছে বিভিন্ন পয়েন্টে। ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিত হতে আরো ৩-৪ দিন লাগবে বলে তারা জানান। তারা আরো জানান, ঝড়ে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে পল্লী বিদ্যুতের দাবি ৫০ ভাগ গ্রাহকের সংযোগ দেয়া হলেও পূর্ণ লাইন চালু করতে আরো ২-৩ তিন লাগবে বলে জানিয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, রবিবার রাতে প্রলয়ঙ্করি ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় সাড়ে ১১হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ৮৬জন। নিখোজ আছে একজন। ঝড়ের ক্ষয়-ক্ষতির চিত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।