বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে হেফাজত অনুসারীদের হামলা লুটপাট ও ভাংচুরের মামলায় মৌলভীবাজার থেকে গ্রেপ্তারকৃত প্রধান ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শহিদুল ইসলাম স্বাধীন মিয়াকে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। রবিবার বিকেলে আদালতে প্রেরণ করে তাকে ১০ দিেেনর রিমান্ড আবেদন জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়া অন্য ২৯ জন আসামীকে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। এর আগে দুপুরে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান তার কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ ঘটনায় দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার কথা জানিয়েছেন।
গত ১৭ মার্চ সকালে দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল গ্রামের ইউপি সদস্য ও যুবলীগের সাবেক ওয়ার্ড সভাপতি সহিদুল ইসলাম স্বাধীন মিয়া তার নিজ গ্রাম নাচনী বাসীকে নোয়াগাও গ্রামে হামলার নেতৃত্ব দেন। তার মতো পার্শবর্তী চ-িপুর, সন্তোষপুর, জারুলিয়া, সরমঙ্গল, ধনপুর এবং কাশিপুর গ্রামের আন্দোলনকারী অন্য নেতারাও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়িয়ে মসজিদের মাইকে প্রচারণা চালিয়ে সাধারণ মানুষকে ক্ষুব্দ করে। কয়েক হাজার মানুষ নোয়াগাও গ্রামে আসে। তবে হামলা ও লুটপাটে অংশ নেয় কয়েকশ মানুুষ। এ ঘটনায় ১৯ মার্চ শেষ রাতে কুলাউড়া থেকে এজাহারভূক্ত আসামি স্বাধীনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকেলে শাল্লা পুলিশের কাছে হস্থান্তর করা হয়। শাল্লা পুলিশ গ্রেপ্তারকৃত আরো ১০ জনের সঙ্গে রবিবার বিকেলে শাল্লা আমলগ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জোনের বিচারক শ্যামকান্ত সিনসার আদালতে হাজির করে তাকে ১০ দিনের এবং অন্য আসামিদের ৫ দিনের করে রিমা- আবেদন করে পুলিশ। তবে আদালত রিমান্ড শুনানীর তারিখ নির্ধারণ না করায় আদালত শহিদুল ইসলাম স্বাধীন মিয়াসহ অন্য আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
উল্লেখ্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলন ও হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হকের সমর্থকরা তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেওয়ায় গত ১৭ মার্চ নোয়াগাঁওয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের গ্রামে হামলা ও লুটপাট চালায়। হামলার সময় তারা ফেইসবুকে লাইভে নিজেদের নাম ধরে পরিচয় দিয়ে মামুনুলের ভক্ত বলে স্বীকার করে। তারা হেফাজতের একশন, মামনুলের একশ, খান সাব হুজুরের একশন বলে মাথায় হেফাজতের ব্যাজ বেধেও অংশ নেয়। গ্রামের ৯১টি বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুরসহ ৭টি পারিবারিক মন্দিরও ভাংচুর করা হয়। হামলাকারীদের ভয়ে ভা-াবিল হাওর হয়ে পালিয়ে যান এলাকাবাসী। বর্তমানে দুটি পুলিশ ক্যাম্প বসিয়ে গ্রামবাসীকে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।