স্টাফ রিপোর্টার::
সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে যাদুকাটা নদীতে বারুণিস্নান সম্পন্ন করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বিরা। তারা বৃহষ্পতিবার রাতেই হিন্দু ধর্মের সাধক ও বারুণি স্নানের প্রবর্তক শ্রী অদ্বৈত আচার্য্যরে জন্মস্থান যাদুকাটা নদীতীরের নবগ্রামে গিয়ে পৌঁছেন। শুক্রবার ভোর থেকেই হাজার হাজার পূণ্যার্থী স্নান সম্পন্ন করেন। পুরোহিতদের কাছে মন্ত্র পড়ে তারা স্নানের পাশাপাশি মা বাবাসহ গুরুজনের অস্থি বিসর্জন দিয়ে স্মৃতি তর্পন করেন। অনেকে মনোবাসনা পূরণের মানিত উপকরণও বিতরণ করেন এবং ভোগ ও লুট বিতরণ করেন। এসময় প্রশাসন তাদের বারণ করেও হিমশিম খায়।
কয়েকশ বছর ধরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তের যাদুকাটা নদীতে গঙ্গারূপী তীর্থ মনে করে মনোবাসনা পূরণের জন্য স্নান উৎসবের শুরু হয়। দেশের বির্ভিন্ন স্থান থেকে লাখো পূণ্যার্থী স্নানের দিনে জড়ো হন। এবার ৯ মার্চ শুক্রবার ভোরে লগ্ন নির্ধারিত ছিল। তাই বৃহষ্পতিবার থেকেই তারা দলে দলে আশ্রয় নেন। সকালেই হাজার হাজার মানুষ স্নান সম্পন্ন করে পাশের ইস্কন মন্দির ও নবগ্রাম অদ্বৈত মন্দিরে আচারাদি পালন করেন। এই স্নান তাদের কাছে গঙ্গারূপী পূণ্যস্নান হিসেবে বিবেচিত।
এদিকে একই সময়ে পাশের লাউড়েরগড়েও মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকিক পীর সাধক শাহ আরেফিনের মাজারেও ওরস চলে। এই দুটি উৎসব শত বছর ধরে হিন্দু মুসলমানের মিলনোৎসব হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে। উৎসবে পূণ্যের আশায় লাখ লাখ মানুষের সমাগম হয়।
এবার মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে জেলা প্রশাসন গত ১ এপ্রিল পূণ্যস্নান ও শাহ আরেফিনের ওরস উৎসব স্থগিত করে। এই নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা না মেনেই হাজার হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বি পূণ্যস্নানে আসেন। একইভাবে শাহ আরেফিনের ওরসেও তার ভক্তবৃন্দ আসছেন বলে জানা গেছে।
তাহিরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ সরদার বলেন, গতকাল বৃহষ্পতিবার থেকেই পুলিশ পূণ্যার্থীদের মানা করছে। তাদের গাড়ি ফিরিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু লুকিয়ে লুকিয়ে তাদের অনেকেই পূণ্যস্নান সম্পন্ন করছেন। তবে আমরা কঠোর হওয়ায় এখন তাদের উপস্থিতি কমেছে।