হাওর ডেস্ক ::
করোনা সংক্রমণের লাগাম টানতে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য ‘সর্বাত্মক’ লকডাউনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ সময়কালে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হবে না। এটি নিশ্চিত করতে মাঠে কঠোর ভূমিকায় দেখা যাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। জরুরি সেবা ছাড়া আর কোনো অফিস-আদালত চলবে না। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলা বর্ষবরণের দিন থেকে ঘরবন্দি জীবনে ফিরে যেতে হবে, যেমনটা দেখা গিয়েছিল গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে। তখন ১০ দিনের জন্য ‘সাধারণ ছুটির মোড়কে পূর্ণ লকডাউনে যায় দেশ। তখনও সংক্রমণ পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ ছিল না। গত বৃহস্পতিবারের হিসাবে দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৭৪ জনের। আর গতকাল শুক্রবার মারা গেছে ৬৩ জন।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রথমে ১৮ দফা দিক নির্দেশনা দেয় সরকার। পরে সাত দিনের জন্য দেশে লকডাউন ঘোষণা করে আরও ১১ নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু হজনগণ সরকারের দেওয়া বিধিমালা সঠিক নিয়মে পালন করেনি। আসছে ফের সাত দিনের লকডাউন। আসন্ন দিনগুলোকে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ বিশেষায়ণ করা হয়েছে। এ সময় সরকার যে নীতিমালা দেবে, তা না মানাকে ‘নির্ঘাত অশনি সংকেত’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ শনিবার দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্টে করেছেন ওবায়দুল কাদের। সেখানেই এ মন্তব্য করেন তিনি। এ ছাড়া করোনারর দিনগুলোতে সাধারন মানুষের উদাসীনতা-উপেক্ষার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের তার পোস্টে লিখেছেন-
‘ভাইরাস আবারও হিংস্র ছোবল মারছে আমাদের উদাসীন শহরে, চরম উপেক্ষার গ্রামীণ জীবনে। চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। হাসপাতালের বেডের জন্য সংক্রমিত মানুষের স্বজনদের হাহাকার। খেটে খাওয়া মানুষের জীবিকার চাকা থেমে যাচ্ছে। থেমে যাচ্ছে জীবনের চির চেনা সুর। থেমে গেছে সেই পাখির কলরব। থেমে গেছে নদীর কলতান। থমকে গেছে চন্দ্র-তারকা খচিত রাতগুলো। বদলে গেছে প্রকৃতির রঙ, বদলে গেছে জীবনের রঙ, বদলে গেছে রাজনীতির রঙ, বদলে গেছে আমাদের আচার-আচরণের রঙ। শুধু বদলায়নি অনিয়মের নিরন্তর যাত্রা। বদলায়নি শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধ। মানুষের শত্রু ভাইরাসকে মানুষই জানাচ্ছে সাদর আমন্ত্রণ। অথচ এই প্রাণঘাতী ভাইরাস কেড়ে নিয়েছে কত আপনজনের প্রাণ। নিভিয়ে দিয়েছে কত চোখের বাতি। তছনছ করে দিয়েছে কত সাজানো সংসার। এই জনপদের কত মানুষ আজ করোনার আঘাতে নিঃস্ব-রিক্ত। তবু কেউ মানেনা স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক পরতে চায় না বেশিরভাগ মানুষ। লকডাউনের কড়াকড়িতে ঢিলেঢালাভাব। পাত্তাই দিচ্ছে না কেউ ভয়ঙ্কর করোনাকে। কিন্তু করোনা কাউকে করে না করুণা। জানি না আর কতকাল গুনতে হবে আমাদের নিজেদের অবহেলার, উপেক্ষার চরম মাশুল। আমাদের সচেতন হবার সময় কি এখনো আসেনি? দেশের জনগণের নিশ্চিন্ত ঘুমের জন্য যিনি সারারাত জেগে থাকেন তার বারবার উচ্চারিত সতর্কবাণী কি কানে পৌঁছায় না? নিজেদের সুরক্ষার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার করোনা নিষেধাজ্ঞা আমরা মানবো না? না মানলে আমাদের সামনে নির্ঘাত অশনি সংকেত।’