অনলাইন ডেক্স::
আরবি শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতটি মুসলমানদের কাছে পবিত্র ও মহিমান্বিত একটি রাত যা শবই বরাত বা ভাগ্যরজনী বলে পরিচিত। রাতটি লাইলাতুল বরাত নামেও পরিচিত। এর অর্থ মুক্তি বা নিষ্কৃতির রজনী। পবিত্র এ রাতে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ তাআলার ইবাদত করলে, আল্লাহর কাছে নিজের পাপ-গুনাহ ও অন্যায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি তা কবুল করেন এবং অনুতপ্ত বান্দাকে গুনাহ থেকে মুক্তি দিয়ে তাকে মাফ করে দেন। এ ছাড়া নেক বান্দার সব দোয়া আল্লাহ কবুল করেন। বছর ঘুরে আবার এসেছে এই রাত।
শবে বরাত সম্পর্কে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘জিবরাইল (আ.) আমাকে বলেছেন, আপনি আপনার উম্মতদের জানিয়ে দিন, তারা যেন শবে বরাত রাতকে জীবিত রাখে।’ অর্থাৎ তারা যেন ইবাদতের মধ্যে কাটিয়ে দেয়। প্রত্যেক মুসলমানের নিজেকে গুনাহমুক্ত করার এ এক অপূর্ব সুযোগ। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা তাই আজ সারা রাত ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন।
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও ইবাদতের পাশাপাশি আমাদের দেশে শবে বরাত উপলক্ষে রুটি, হালুয়া তৈরি করে গরিব-মিসকিন, আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদের মধ্যে বণ্টন করা হয়। দান-খয়রাতও করেন অনেকে। এর ফলে গরিব জনগোষ্ঠী ভালো খাবার পায় ও উপকৃত হয়। আর পাড়া প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনের মধ্যে শবে বরাত উপলক্ষে বানানো খাবার–দাবারের বিনিময় পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও প্রীতিপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে।
তবে দুঃখজনকভাবে শবে বরাতের রাতে পটকা ফোটানো ও আতশবাজি পোড়ানোর একটি রীতি অনেকে পালন করেন। এটা এই রাতের পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে বেমানান। আইনগতভাবেও এই রাতে এ ধরনের কিছু করা নিষিদ্ধ। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) শবে বরাতের পবিত্রতা রক্ষার্থে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পালনের জন্য ঢাকা মহানগর এলাকায় আতশবাজি ফোটানো ও বিস্ফোরক দ্রব্য বহন নিষিদ্ধ করেছে। এ নিষেধাজ্ঞা যাতে কেউ ভঙ্গ করতে না পারে, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
পবিত্র শবে বরাতে নিজের জন্য প্রার্থনার পাশাপাশি দেশ, দেশের সব মানুষ ও সারা বিশ্বের কল্যাণের জন্যও সর্বশক্তিমানের দয়া কামনা করা হয়। শবে বরাতের পবিত্র রাতের মহিমায় পৃথিবী হয়ে উঠুক আমাদের সবার জন্য একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ আবাস।