হাওর ডেস্ক::
ভারতের অযোধ্যার বাবরি মসজিদের নামে বিদেশ থেকে মোবাইল ব্যাংকিং এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে হেফাজত নেতা মামুনুল হক টাকা আনতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ হেফাজতে সাত দিন তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর আজ রোববার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার হারুন অর রশিদ।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মামুনুল হকের জব্দ করা মোবাইল ফোন থেকে বাবরি মসজিদের নামে কাতার, দুবাই ও পাকিস্তান থেকে টাকা আনার তথ্য-প্রমাণও মিলেছে। দেশের বাইরে থেকে মোবাইল ব্যাংকিং ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লক্ষ কোটি টাকা এনে তিনি বিভিন্ন মসজিদে-মাদ্রাসায় জঙ্গি, উগ্রবাদী কাজে ব্যবহার করতেন।’
মামুনুল হেফাজতে ইসলামকে ‘পাকিস্তানের একটি সংগঠনের আদলে’ পরিচালনা করতে চেয়েছিলেন জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘তিনি রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষী ছিলেন। জামায়াতের সহায়তায় ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা ভাবনা ছিল তার।’ এ ছাড়া ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় জড়িত জঙ্গিদের ‘ঘনিষ্ঠ’ ছিলেন দাবি করেছে পুলিশ। ওই হামলার সঙ্গে জড়িত এক জঙ্গির সঙ্গে ২০০৫ সালে পাকিস্তানে গিয়ে ৪৫ দিন ছিলেন মামুনুল। সেখানে বিভিন্ন জঙ্গি ও রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে তখন যোগাযোগ করেন।
রোববার সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে জঙ্গিবাদের সঙ্গে তার (মামুনুল) সম্পৃক্ততার তথ্য উঠে এসেছে। মামুনুলের ভগ্নিপতি মাওলানা মুফতি নেয়ামত উদ্দিন, মাওলানা তাজউদ্দীন ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। একবার নেয়ামত উদ্দিন গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। তাকে পরে ছাড়িয়ে আনে। এই নেয়ামতের সঙ্গে ২০০৫ সালে পাকিস্তানে গিয়ে ৪৫ দিন ছিলেন মামুননুল। সেখানে বিভিন্ন জঙ্গি ও রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে তখন যোগাযোগ করেন।’
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতায় হেফাজতের বিক্ষোভ কর্মসূচি ও হরতালকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে ব্যাপক তাণ্ডব চলে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণহানিও হয়। পরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীসহ আটক হন হেফাজত নেতা মামুনুল হক। পরে একাধিক বিয়ের কথা জানান মামুনুল হক। গত ১৮ এপ্রিল দুপুরে ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করার পর মোহাম্মদপুর থানার নাশকতার এক মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামুনুলকে সাত দিন রিমান্ডে নেয় পুলিশ।