বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জ-১ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বড় ভাই মোশারফ হোসেন মাসুদকে না বলে পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করায় সুনামগঞ্জ জেলা আঞ্চলিক কৃষি ব্যাংকের পরিদর্শক ও জেলা সিবিএ সভাপতি বিকাশ রঞ্জন সরকারকে মারধরের পর তার বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে। হয়রাণিমূলক এই মামলার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জ জেলা হিন্দু যুব পরিষদ সুনামগঞ্জ জেলা শহরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। শুক্রবার সকালে ট্রাফিক পয়েন্টে অনুষ্টিত মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন অংশ নেন। তারা অবিলম্বে মামলাটি প্রত্যাহারসহ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপিকে বিকাশরঞ্জন সরকারের জমি বিক্রির পাওনা টাকা পরিশোধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন পাইকরহাটি গ্রামের বাসিন্দা বিকাশ রঞ্জন সরকার গত ৩ মে পৈত্রিক কিছু জায়গা বিক্রি করেন। সেখানকার স্থাপনা সরাতে গেলে মোশারফ হোসেন মাসুদকে না বলায় কৈফিয়ত তলব করেন। এসময় বিকাশ জানান, তার ভাই মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপিকে ২ একর ৫ শতক জমি কয়েক বছর আগে দলিল করে দিলেও এখনো সেই টাকা পাননি। তাই তিনি তাদেরকে জমি বিক্রির কথা শুনানোর প্রয়োজন মনে করেনননি। এতে ক্ষুব্দ হয়ে মোশারফ হোসেন মাসুদ ও তার ছেলে তানভির হোসেন সাগর বিকাশ রঞ্জন সরকারকে মারধর করে। এসময় তিনি পাশের একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন এবং পুলিশের হেল্পলাইন ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন করে উদ্ধারের অনুরোধ জানান। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় ৪ মে বিকাশ রঞ্জন সরকার এমপির ভাই মোশারফ হোসেন মাসুদ ও তার ছেলে তানভির হোসেন সাগরকে আসামি করে ধর্মপাশা থানায় মামলা দায়ের করেন। এদিকে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজি যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায় এমপির বড় ভাই ও তার ছেলে বিকাশরঞ্জন সরকারকে মারধরের জন্য বারবার তেড়ে যাচ্ছেন। মোশারফ হোসেন মাসুদ ‘মালাউনের বাচ্চা’ বলে বারবার গালি দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগ দলীয় এমপির ভাইয়ের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ব্যক্তিকে নিয়ে এমন কটুক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ করেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষজন।
এদিকে এ ঘটনায় ক্ষুব্দ হয়ে পরদিন তানভির আহমদ সাগরের বন্ধু পাইকুরহাটি গ্রামের ভাড়াটে মোটর সাইকেল চালক পিন্টু বাদী হয়ে বিকাশ রঞ্জন সরকারের বিরুদ্ধে জমি বায়নার টাকা নিয়েছেন মর্মে একটি মামলা দায়ের করেন। তবে এই মামলায় জমির বায়না নেওয়া হয়েছে মর্মে যে স্বাক্ষী রাখা হয়েছে তারা জানিয়েছেন তারা এসব বিষয়ে কিছু জানেননা। এই মামলাকে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দাবি করে ৭ মে শুক্রবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা শহরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে ‘সুনামগঞ্জ জেলা হিন্দু যুব পরিষদ’। তারা এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনকে জমি বিক্রির অপরিশোধিত টাকা পরিশোধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মানববন্ধন সমাবেশে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ জেলা হিন্দু যুব পরিষদের সভাপতি অমর চক্রবর্তী, সাংগঠনিক সম্পাদক সেন্টু রঞ্জন কর, যুব পরিষদের নেতা মনি আচার্য্য প্রমুখ।
তবে মোশারফ হোসেন মাসুদ এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন তিনি বিকাশ রঞ্জন সরকারকে মারধর করেননি। কেবল জায়গা বিক্রি করছেন তাদেরকে জানালেননা কেন েএই কথা বলেছিলেন। মামলার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেননা বলে জানান।