ধর্মপাশা প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় একদিনে দুটি বাল্য বিয়ে পণ্ড করে দিয়েছে প্রশাসন। এসময় মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগপর্যন্ত বিয়ে না দেওয়ার জন্য অভিভাকরা লিখিতভাবে অঙ্গীকার করেন।
রোববার (১৬ মে) দুপুরে স্থানীয় একজনের মাধ্যমে বাল্য বিয়ের আয়োজনের খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ সেখানে গিয়ে অভিভাবকদের বুঝিয়ে বিয়ে দুটি বন্ধ করা হয়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়নের একটি গ্রামে আজ রোববার দুপুরে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীর (১২) সঙ্গে একই গ্রামের এক তরুণের (২২) বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। স্থানীয় এক যুবক বাল্যবিবাহ আয়োজনের খবরটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসানকে অবগত করলে তিনি তাৎক্ষণিক মুঠোফোনে মো. মবিন উদ্দিন (৩৫) নামের এক শিক্ষককে বাল্যবিবাহটি বন্ধ করতে মুঠোফোনে নির্দেশ দেন। ওই শিক্ষক সকাল সাড়ে ১২টার দিকে বর ও কনের বাড়িতে যান।
এ সময় তিনি অভিভাবকদের ১৮ বছরের আগে কোনো মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার কুফল ও রাষ্ট্রীয় আইনে এ ধরণের বিয়ের স্বীকৃতি নেই, এমনটি বুঝিয়ে বলেন। ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মেয়েটিকে কোথাও বিয়ে দেওয়া হবে না বলে দুই পক্ষের লোকজন এ বিষয়ে লিখিতভাবে অঙ্গীকার করেন।
অন্যদিকে উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের একটি গ্রামে এক কিশোরীর (১৩) সঙ্গে পাশে মোহনগঞ্জ উপজেলার এক তরুণের (২৫) আজ রোববার (১৬ মে) বেলা দুইটার দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কনের এক বান্ধবীর কাছ থেকে খবর পেয়ে ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ চৌধুরীকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
নির্দেশনা পেয়ে কনের বাড়িতে যান ধর্মপাশা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন চন্দ্র দাস। কনের বাড়িতে পুলিশ রয়েছে, এমন খবর পেয়ে বর ও বরযাত্রী কনের বাড়িতে যাননি। পরে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বাল্যবিবাহের কুফল এবং এ নিয়ে আইনে কী বলা আছে, তা মেয়েপক্ষের অভিভাবকদের বুঝিয়ে বলেন। এরপর তাঁরা এই বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে সম্মত হন। অভিভাবকদের বুঝিয়ে বিয়ে দুটি বন্ধ করা হয়। এখানেও মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগপর্যন্ত বিয়ে না দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন অভিভাবকরা।
ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনতাসীর হাসান বলেন, বাল্যবিবাহ বন্ধে উপজেলা প্রশাসন সব সময় তৎপর রয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে আজকেও দুটি বাল্য বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে।