মোঃ মোশফিকুর রহমান স্বপন।
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় উপজেলার বেরিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী নূর ইসলাম খানের বিরুদ্ধে সরকারি বই ও বিদ্যালয়ে সরবরাহকৃত বিস্কুটের খালি বাক্স গোপনে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনা তদন্তে বুধবার দুপুরে দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জমা দেওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, উপজলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের বেরিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী নুর ইসলাম খান বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য দেওয়া সরকারি অনেক পাঠ্য বই ও বিপুল সংখ্যক বিস্কুটের খালী বাক্স উপজেলা সদরের এক ভাঙারী ব্যবসায়ীর কাছে গোপনে বিক্রি করে দেন। মঙ্গলবার মধ্যরাতে ওইসব মালামাল বিদ্যালয় থেকে বের করে ভ্যান গাড়িযোগে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে সরকারি মালামাল বোঝাই ওই ভ্যানগাড়ি জব্দ করে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মালামাল বোঝাই গাড়ি দুইটি আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এর সঙ্গে বেরিয়ে আসে বই ও বিস্কুটের বাক্স বিক্রির মূল হোতার নাম। এসময় ধর্মপাশা উপজেলার বেরিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী ইসলাম খান ওই বই বিক্রি করেছেন বলে তার স্বাক্ষরিত একটি রশিদ পুলিশসহ স্থানীয় লোকজনদেরকে ভ্যান চালকরা দেখিয়েছে বলে জানান ইউপি সদস্য আবু সাঈদ।
প্রধান শিক্ষক আলী নূর ইসলাম খান দাবি করেছেন, বইগুলো ইঁদুরে কেটে ফেলেছে। এলোমেলোভাবে পড়ে ছিল কক্ষে। তাই উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ মুকুলকে অবহিত করে তিনি বই ও বিস্কুটের বাক্সগুলো উপজেলায় পাঠাচ্ছিলেন। প্রধান শিক্ষকের এমন দাবি নাকচ করে দিয়েছেন আহসান উল্লাহ মুকুল ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানবেন্দ্র দাস দুইজনই।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন বলেন, প্রধান শিক্ষক প্রায় ৬০০ কেজি বই ও বিস্কুটের কার্টন বিক্রি করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আমরা ম্যানেজিং কমিটির কেউ কিছুই জানি না।আমাদের সাথে কোন পরামর্শ করেননি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানবেন্দ্র দাস বলেন, ওই প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে।
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী বলেন, সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে। জব্দ করা মালামাল আমাদের জিম্মায় রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনতাসির হাসান বলেন, বিষয়টি তদন্তে দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।###