হাওর ডেস্ক:;
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি এসএইচএমবি নূর চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর দাবি জোরালোভাবে সামনে এনেছেন কানাডায় বাংলাদেশের হাই কমিশনার খলিলুর রহমান।
তিনি বলেছেন, মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে দুই দশক ধরে কানাডায় পালিয়ে থাকা নূর চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি ‘দুই দেশের সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ’।
কানডার পত্রিকা দি হিল টাইমসকে দেওয়া এক ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে খলিলুর রহমান বলেন, “একজন দণ্ডিত খুনিকে কানাডা আশ্রয় দিয়ে রেখেছে… ২০ বছরের বেশি হতে চললো। এটা একটা অমীমাংসিত ইস্যু।”
একক বিষয় হিসেবে এটাই এখন দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে ‘গুরত্বপূর্ণ ইস্যু’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এটার যদি সমাধান হয়, কানাডা-বাংলাদেশের সম্পর্ক এযাবৎকালের সবচেয়ে ভালো অবস্থায় পৌঁছাতে পারে।”
মুক্তিযুদ্ধের চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করে একদল সেনা সদস্য।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সেই মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে দণ্ডিত পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। কিন্তু মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরও কয়েকজন পলাতক থেকে যান, যাদের একজন হলেন এসএইচএমবি নূর চৌধুরী।
তাকে দেশে ফেরানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা চালিয়ে আসছে, কিন্তু তাতে কোনো ফল আসেনি।
নূর চৌধুরী ও তার স্ত্রী ১৯৯৬ সালে সেদেশে যাওয়ার পর উদ্বাস্তু হিসেবে আশ্রয়ের আবেদন করেন। কিন্তু গুরুতর অপরাধে সংশ্লিষ্টতার তথ্য থাকায় ২০০২ সালে তাদের আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে কানাডা।
এরপর আপিল করেও ২০০৬ সালে তারা হেরে যান। তারপরও তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়নি।
এ অবস্থায় মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা কীভাবে কানাডায় বসবাস করছেন, সেই অভিবাসন সংক্রান্ত তথ্য দেশটির সরকারের কাছে চেয়েছিল বাংলাদেশ।
কিন্তু কানাডার আইনে মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত কাউকে প্রত্যর্পণে বাধা থাকায় সে দেশের সরকার ‘জনস্বার্থ রক্ষার’ যুক্তি দিয়ে তথ্য প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল।
২০১৯ সালে এক রায়ে কানাডার ফেডারেল আদালত সিদ্ধান্ত দেয়, নূর চৌধুরীর অভিবাসন সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশে জনস্বার্থের ব্যাঘাত ঘটবে না। সুতরাং তার বিষয়ে বাংলাদেশকে তথ্য না দেওয়ার সিদ্ধান্ত কানাডা সরকারকে পুনর্বিবেচনা করতে
আদালতের ওই আদেশের পর দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও কানাডা সরকার এখনও নূর চৌধুরীর অভিবাসন সংক্রান্ত তথ্য এখনও প্রকাশ করেনি বলে হিল টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান খলিলুর রহমান।