হাওর ডেস্ক::
দেশীয় টিয়া পাখি খাঁচায় আটকে রেখে বিজ্ঞাপন নির্মাণ করায় মোবাইল অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোন লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।
বুধবার (৩০ জুন) বিকেলে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা।
গ্রামীণফোনের ওই বিজ্ঞাপনে দেশীয় টিয়া পাখি খাঁচায় বন্দি অবস্থায় প্রদর্শন করে বন্যপ্রাণী অপরাধে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে, যা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পক্ষ থেকে আইনটির ৩৮(২), ৪১ ও ৪৬ নম্বর ধারায় গ্রামীণফোন লিমিটেডকে অভিযুক্ত করে মামলাটি দায়ের করা হয়।
এর আগে, গ্রামীণফোনের তৈরি করা বিজ্ঞাপনটি প্রচার হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে। পাখিপ্রেমীরা অভিযোগ তোলেন, গ্রামীণফোনের এই বিজ্ঞাপনে পাখি শিকার ও খাঁচায় আটকে রাখাকে উৎসাহিত করা হয়েছে। এতে দেশে বন্য পাখি শিকারসহ বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধের হার বাড়তে পারে। তাই দ্রুত গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
গ্রামীণফোন-এর প্রচার করা বিজ্ঞাপনটিতে দেখা যায়, এক বাবা তার শিশুর জন্য খাঁচায় আটকানো একটি টিয়া পাখি নিয়ে আসেন। পাখিটির সঙ্গে প্রথমে বাসার পালিত কুকুরের বৈরি সম্পর্ক তৈরি হলেও শেষ পর্যায়ে মেয়েটি প্রাণী দুটির মাঝে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে দেয়। দুটি প্রাণীর সঙ্গে মেয়েটির কথা বলাকে উদাহরণ করে প্রতি সেকেন্ড ১ পয়সায় কথা বলার অফার প্রচার করে গ্রামীণফোন।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ এর ৩৮(২) ধারা অনুযায়ী কেউ অভিযুক্ত হলে সর্বোচ্চ ৬ মাস পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
এদিকে আইনের ৪৬ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোন কোম্পানী কর্তৃক এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হইলে উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে কোম্পানীর এমন প্রত্যেক পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব, অংশীদার, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী উক্ত অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।’