জামিল আহমেদ জুয়েল::
অনেক প্রতীক্ষার পর সম্ভবত শিঘ্রই পূর্নাঙ্গ হতে যাচ্ছে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি। ২০১৬ সনের ২৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি সম্পাদকের নাম ঘোষণা হলেও ২০১৭ সনের মাঝামাঝি সময়ে এসেও পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি জেলা আওয়ামী লীগ। এরই মধ্যে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তপ্ত হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনায়। হয়েছে নতুন মেরুকরণ।
দলের অভ্যন্তরীন কোন্দলের কারনে একটা সফল কর্মসূচি করতে দেখা যায়নি জেলা আওয়ামী লীগকে। আগের চেয়ে বরং গ্রুপিং আরও সুদৃঢ় হয়েছে। এমন অনৈক্যের কারণে ইউপি নির্বাচনে বলির পাঠা হয়েছেন বহু দলীয় প্রার্থী। আবার অনেকেই তৃণমূলের মতামত থাকা সত্বেও গ্রুপিং-র কারনে দলীয় প্রার্থী হতে পারেননি। এ নিয়ে একে অপরকে দায় চাপাতে শোনা গেছে কিন্তু এক মুহুর্তের জন্য তৃনমূল নেতাকর্মীদের সান্তনার বাণী বা দুঃখ প্রকাশ করতে শোনা যায়নি। কোন নেতার কন্ঠে বা বিবৃতিতে সেই সুর লক্ষ্য করা যায়নি। এই অনৈক্যের ভার কেবল সভাপতিসম্পাদকের নয়; কিন্তু তারাও দায় এড়াতে পারেননা। দলের প্রথম সাড়ির প্রায় সকলই গ্রুপিং-এ সম্পৃক্ত। নেতাদের প্রয়োজনের সময় তৃণমূলের উপর দরদ একেবারে উপচে পড়ে। কোন রকম সময়টা পাড় হলেই আগের ভাবখানা ফোটে ওঠে। সেই ভাবখানা দেখে দুঃখ কষ্টে তৃণমূল ঘরে ফিরে। তবুও আবার যখন ডাক আসে সেই তৃণমূলের নেতা কর্মীরা আবারও আশায় বুক বেঁধে নেতাদের ডাকে সাড়া দেয় একটি সম্প্রীতির সূর্যোদয়ের আশায়।
মাননীয় নেত্রী, আপনি সর্বদাই তৃণমূলকে মূল্যায়ন করতে বলেন কিন্তু আপনার প্রতিনিধিরা সেই তৃণমূলকে কতটুকু মূল্যায়ন করছে তা একটু খতিয়ে দেখলে আপনার কাছে সবকিছু পরিস্কার হয়ে যাবে। তৃণমূলের অগুণতি নেতাকর্মী আপনার মুখপানে চেয়ে আছে। তারা আপনার কাছাকাছি যাবার সুযোগ পায়না তাই তাদের বাসনাগুলো নিরবে নিভৃতে কাঁদে। নেত্রী, এই তৃণমূলই কিন্তু আপনার প্রাণ। প্রয়োজনে নিজস্ব সেল গঠন করে জেলা ওয়ারী তৃণমূলের খোঁজ খবর নিতে পারেন। দলের এমপি, নেতা, উপনেতারা গ্রুপের খবর রাখে তৃনমূলের না। দলের সাধারণ সম্পাদক মহোদয় শুরু থেকে বলে আসছেন-দলে অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, অযোগ্য নেতাদের ভীড়। হাইব্রিড, কাউয়া ইত্যাদিও বলে আসছেন। কিন্তু এর বাস্তবতা কোথায়? বরং এরা আরও প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে। আমাদের এলাকায়ই এর একাধিক বাস্তব উদাহরণ আছে। আপনার কথা শুনলেই মনটা চাঙ্গা হয় আবার ক্ষণপরে ভেঙ্গেও যায়। আপনি দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। তাই শুধু মুখে নয় আপনার নিকট আমরা কার্যকরী পদক্ষেপ আশা করি। বঙ্গবন্ধুর ডাকে ৭১-এ এই তৃণমূলের মানুষই জীবন বাজি রেখেছিল। তারা কোন সেকেন্ড অপশন চিন্তায় আনেননি। এখনো শেখ হাসিনার ডাকে তৃণমূল পূর্বের ন্যায় কোন প্রকার সেকেন্ড অপশন ব্যতিরেখেই রাজপথে দাঁড়াবে। তাই নেতা নির্বাচনে তৃণমূলের নেতাকর্মী বান্ধব নেতাদের খোঁজে বের করে নেতৃত্ব তুলে দিলেই দলের সাংগঠনিক ভীত মজবুত হবে। কারো প্রতি খুশী হয়ে নেতৃত্ব দিলে তিনি তার পকেটের লোকই খোঁজবেন দলের বা নেত্রীর নয়।
আপনারা সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি পূর্নাঙ্গ করতে প্রক্রিয়া করছেন শুনে তৃনমূলের নেতা কর্মীরা একটি কর্মীবান্ধব কমিটির স্বপ্ন দেখছে। যা হবার হয়ে গেছে। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীর পথে একটি কর্মীবান্ধব তৃণমূল প্রেমিক নেতাদের দিয়ে হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি দেখার একান্ত প্রত্যাশায় রইলাম।
লেখক: জামালগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা, সংস্কৃতিকর্মী, জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী।