আল আমিন::
গত চারদিন ধরে ভারতের মেঘালয় ও খাসিয়া হিল থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সীমান্ত এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও দোয়ারাবাজার উপজেলার নিমনাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি এসব এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গেছে। প্লাবিত হয়েছে অন্তত শতাধিক গ্রাম। তবে সুনামগঞ্জ পয়েন্টে জেলার প্রধান নদী সুরমার পানি বিপদসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, পাহাড়ি ঢলে ৬০ হেক্টর রোপা আমন, আউস ৫৫ হেক্টর ও ২৫ হেক্টর বর্ষাকালীন সবজি বিনষ্ট হয়েছে। দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্ত নদীতে নির্মিত খাসিয়ামারা রাবার ড্যামের বেড়িবাধ ভেঙ্গে যাওয়ায় কয়েকটি গ্রামের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এ উপজেলার দোয়ারা-ছাতক রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায়ে ছাতকের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া পাহাড়ি ঢলে উপজেলার আভ্যন্তরিণ কয়েকটি রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় দোয়ারা উপজেলা সদরের ২০ টি গ্রামের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কয়েকটি বাণিজ্যিক পুকুরের মাছও ভেসে গেছে। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা এলাকার তিন কি.মি. সড়ক পাহাড়ি ঢলে ভেঙ্গে যাওয়ায় জেলণা সদরের সঙ্গে তাহিরপুর উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া এই তিন উপজেলার নি¤œাঞ্চলের প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে বলে জানান দোয়ারাবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ও বিশ্বম্ভরপুরের ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রনজিত চৌধুরী রাজন জানান। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তালুত জানান, সুনামগঞ্জ হাওরাঞ্চল হিসেবে হাওরের প্রতিটি গ্রামই স্বাভাবিকভাবে এখন প্লাবিত। এটা বর্ষার স্বাভাবিক চিত্র।
জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে। চাহিদা মোতাবেক ত্রাণ সহায়তার প্রয়োজন হলে দেয়া হবে।
স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইকবাল আহমদ জানান, পাহাড়ি ঢলে তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও দোয়ারাবাজার উপজেলার গ্রামীণ সড়ক, স্লুইচ গেইট, বন্যা প্রতিরক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আফসার উদ্দিন জানান, সুরমা নদীর পানি বৃহষ্পতিবার সকালে বিপদ সীমার ৮৩ রসেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া পাহাড়িঢল অন্যান্য উপজেলার নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত করছে।