হাওর ডেস্ক::
যুক্তরাজ্যে সদ্য অনুমোদন পাওয়া করোনাভাইরাসের মুখে খাওয়ার ওষুধ ‘মলনুপিরাভির’ বাংলাদেশের বাজারে চলে এসেছে।
অনুমোদিত ১০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ওষুধটি এরমধ্যে বাজারজাতকরণ শুরু করেছে বলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মঙ্গলবার এসকেএফ ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসও ওষুধ তৈরি ও বাজারজাতের অনুমোদন পেয়েছে। অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায় আছে ইনসেপ্টা, হেলথকেয়ার, দিএকমি, পপুলার, বিকন, রেনাটা ও জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালস।
“এই প্রথম মুখে খাওয়ার কোনো অ্যান্টিভাইরাল আমাদের দেশে আসল। গতকাল আমরা বেক্সিমকোকে এবং আজকে এসকেএফকে ইমার্জেন্সি ইউজ এবং মার্কেটিং অথরাইজেশন দিয়েছি। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদন আমরা ইভ্যালুয়েশন করছি তারাও ইমার্জেন্সি ইউজ অথরাইজেশন পাবে। দেশের বাজারে এই ওষুধ পাওয়া যাবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে।”
‘উন্নয়নশীল দেশ’ হিসেবে কিছু ওষুধের ক্ষেত্রে ‘মেধাস্বত্ত্ব ছাড়ের’ সুযোগ থাকায় বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো দ্রুত এই ওষুধ আনতে পারছে বলে তিনি জানান।
প্রতিদিন দুই বেলা চারটি করে আটটি ক্যাপসুল খেতে হবে। এই ওষুধের কোর্স চলবে ৫দিন। ২০০ মিলিগ্রামের প্রতিটি ক্যাপসুলের দাম পড়বে ৫০ টাকা করে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এই ওষুধ খেতে হবে বলে জানিয়েছেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রায় ১৭০টি সাইটে করোনাভাইরাসের এই ওষুধের ট্রায়াল হয়েছে। ফলাফল ভালো হওয়ায় যুক্তরাজ্যে অনুমোদন পেয়েছে।
“আমাদের দেশেও আমরা এটা পরীক্ষা করেছি। যুক্তরাজ্যে অনুমোদন পাওয়া এবং আমাদের পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই আমরা এই ওষুধের ইমার্জেন্সি ইউজ অথরাইজেশন দিয়েছি।”
তবে ওই ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এবং আঠারো বছরের নিচের কেউ ব্যবহার করতে পারবেন না বলে সতর্ক করে মাহবুবুর রহমান বলেন, যারা মৃদু ও মাঝারি মাত্রায় কোভিড আক্রান্ত তারা এই ওষুধ ব্যবহার করবেন।
“এই ওষুধের কার্যকারিতা ভালো। হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর পরিমাণ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে বলে গবেষণায় দেখা গেছে। এর মারাত্মক কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনো খবরও পাওয়া যায়নি।”
বেক্মিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজা মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রতিটি ২০০ মিলিগ্রামের ক্যাপসুলের দাম ২৭০ টাকা। সে হিসাবে এই ওষুধের কোর্স শেষ করতে হলে মোট খরচ হবে ২ হাজার ৮০০ টাকা।
যুক্তরাষ্ট্রের দুই কোম্পানি মার্ক শার্প অ্যান্ড ডোম (এমএসডি) ও রিজেবাক বায়োথেরাপিউটিক যৌথভাবে তৈরি করেছে লাগেভ্রিও (মলনুপিরাভির) নামে মুখে খাওয়ার এই ওষুধ।
এর আগে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে তাদের তৈরি ওষুধ মলনুপিরাভির মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকা কোভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার হার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারছে বলে প্রমাণ মিলেছে।
গত বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাসের উপসর্গের চিকিৎসায় মুখে খাওয়ার প্রথম ওষুধটি যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার রেগুলেটরি এজেন্সির (এমএইচআরএ) অনুমোদন পেয়েছে।