হাওর ডেস্ক::
করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় মুখে খাওয়ার ওষুধ ‘মলনুপিরাভির’ এর জেনেরিক সংস্করণ ‘মোলভির’ নামে বাজারে আনছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আগামী শনিবার থেকে এ ওষুধ বাজারে পাওয়া যাবে। প্রতিটি ক্যাপসুলের দাম পড়বে ৫০ টাকা।
এই অনুষ্ঠানে মোলভিরের মোড়ক উন্মোচন করেন স্কয়ারের কর্মকর্তারা।
গত ৮ নভেম্বর ‘মলনুপিরাভির’ ওষুধের উৎপাদন ও বাজারজাত করার অনুমতি পায় দেশের এই ওষুধ কোম্পানিটি।
স্কয়ার ছাড়াও এ পর্যন্ত বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস, রেনাটা ফার্মাসিউটিক্যালস এই ওষুধ তৈরির অনুমোদন পেয়েছে। আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায় আছে।
ইতোমধ্যে ‘ইমোরিভির’ নামে বেক্সিমকো এবং এসকেএফ ‘মনুভির’ নামে ক্যাপসুল বাজারে ছেড়েছে।
অনুষ্ঠানে ‘মোলভির’ ব্যবহারের নানা ইতিবাচক দিক তুলে ধরে বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক মো. আতিকুজ্জামান।
তিনি বলেন, “গুণগত মানের দিক থেকে মোলভির ক্যাপসুল অনেকাংশে এগিয়ে রয়েছে। দ্রুত দ্রবণীয় হওয়ায় এই ক্যাপসুল ৩০ মিনিটে কাজ শুরু করে।
“এই ক্যাপসুলের ফর্মুলেশনে কোনো সোডিয়াম নেই, তাই এটা হার্ট ও কিডনি রোগীদের জন্য নিরাপদ। এই ক্যাপসুলের আকারও অনেক ছোট হওয়ায় ক্যাপসুল গ্রহণেও সুবিধা রয়েছে।”
কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে দিনে ও রাতে চারটি করে আটটি ক্যাপসুল খেতে হবে জানিয়ে আতিকুজ্জামান বলেন, “পাঁচ দিন ব্যবহারে একজন কোভিড আক্রান্ত রোগীকে খরচ করতে হবে দুই হাজার টাকা। দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় রোগীদের ওপর তেমন চাপ পড়বে না।”
কোম্পানির সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট এবং টেকনিক্যাল সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক এরিক এস চৌধুরী ওষুধের কার্যকারিতার দিকটি তুলে ধরেন।
“কোভিডের টিকা নেননি এমন আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এই ওষুধ ৮৭ শতাংশেরও বেশি কার্যকর। দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন এমন মানুষের ওপর এটা ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকর হবে বলে আশা করছি।”
“আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এই ওষুধের মাধ্যমে হাসপাতালগুলোর ওপর চাপ কমানো। এটা করতে পারলে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হারও কমবে,” বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের বিপণন বিভাগের পরিচালক আহমেদ কামরুল আলম এবং বিক্রয় বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মাহমুদুর রহমান ভূঁইয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের দুই কোম্পানি মার্ক শার্প অ্যান্ড ডোম (এমএসডি) ও রিজেবাক বায়োথেরাপিউটিক যৌথভাবে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় লাগেভ্রিও (মলনুপিরাভির) নামে প্রথম মুখে খাওয়ার ওষুধ তৈরি করে।
এর আগে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে তাদের তৈরি ওষুধ ‘মলনুপিরাভির’ মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকা কোভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার হার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার প্রমাণ মিলেছে।
গত ৪ নভেম্বর করোনাভাইরাসের উপসর্গের চিকিৎসায় মুখে খাওয়ার প্রথম ওষুধটি যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার রেগুলেটরি এজেন্সির (এমএইচআরএ) অনুমোদন পেয়েছে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানায়, ‘উন্নয়নশীল দেশ’ হিসেবে কিছু ওষুধের ক্ষেত্রে ‘মেধাস্বত্ত্ব ছাড়ের’ সুযোগ থাকায় বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো দ্রুত এই ওষুধ বাজারে আনতে পারছে।