1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

ছাতকে মাদরাসায় এতিম শিশুকে ভয়াবহ নির্যাতন : ভিডিও ভাইরাল

  • আপডেট টাইম :: মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২১, ১২.০৪ এএম
  • ২৬১ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের ছাতকে এতিম শিশুকে বেধড়ক পেটানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। খুব নৃশংসভাবে ৮-৯ বছরের এক শিশুকে পিটাচ্ছেন মাদরাসা শিক্ষক। এক পর্যায়ে সহ্য না করতে পেরে শিশুটি পা ধরে ফেলে শিক্ষকের। তারপরও রেহাই পায়নি। প্রতিষ্টানের প্রধান মাওলানা মো. আব্দুল মুকিত প্রহার করেছেন দানবের মতো। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে সম্মানের সঙ্গে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ওই শিক্ষকও ইতোমধ্যে অন্য একটি মাদরাসায় চাকুরি নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে এলাকার অনেকে জানিয়েছেন তাকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে পরিচালনা পরিষদ।
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার হাজি ইউসুফ আলী এতিমখানা হাফিজিয়া দাখিল মাদরাসার মোহতামিম (অধ্যক্ষ) মো. আব্দুল মুকিত একই উপজেলার রহমতপুর গ্রামের বাসিন্দা। কয়েক বছর আগে ওই প্রতিষ্টানে নিয়োগ পান তিনি। নিয়োগের পরই তিনি এভাবে প্রতিদিন কারণে অকারণে দানবের মতো এতিম শিশুদের প্রহার করতেন। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি। ওই প্রতিষ্ঠানে এতিমশ শিশুদের এভাবেই শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ আছে।
প্রায় মাস খানেক আগের দুই মিনিট ২ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায় পাজামা পাঞ্জাবি পড়–য়া তিনজন কোমলমতি এতিম শিশু দাড়িয়ে আছে। তাদের সামনে দানবের মতো স্টিলের স্কেল নিয়ে দ-ায়মান মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আব্দুল মুকিত। ৮-৯ বছরের এতিম শিশু একই উপজেলার রাজাপুর গ্রামের আবু তাহের, শফিউর রহমান ও নিলয় মিয়া কাচুমাচু করে দাড়িয়ে আছে। শফিউর ও নিলয়কে এর আগে বেদম প্রহার শেষে ৮-৯ বছরের আবু তাহেরকে দুই হাত বের করে স্টিলের স্কেল দিয়ে সমানে পিটাতে থাকেন মাওলানা মো. আব্দুল মুকিত। এক পর্যায়ে সহ্য করতে না পেরে শিশুটি ছুটে এসে শিক্ষকের পায়ে ধরে। ‘হুজুর আফনার পাও ধরি, হুজুর। আপনার পাও ধরি। ও মাগো। হুজুর আপনার পাও ধরি। আল্লাগো আর জীবনে ইতা করতামনা।’ বলে শিশুটি আঘাতে আঘাতে কাঁদে আর বাঁচার আকুতি জানায়। তারপরও প্রহার না থেমে বেড়ে চলে। হাতের সঙ্গে শরিরে আঘাত করতে থাকেন। শরিরের সব শক্তি নিয়ে তিনি শিশুটিকে পেটান। ‘আল্লাগো আল্লাগো’ বলে চেচাতে থাকে শিশুটি। এক পর্যায়ে দ্বিতীয়বার আরেক শিক্ষকের কাছ থেকে বেত নিয়ে আবাওর পেটাতে থাকেন শিশুটিকে। প্রহারের চোটে মাটিতে পড়ে গেলে মাটিতে ফেলেও তাকে প্রহার অব্যাহত রাখেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ওই ভিডিওটি কয়েক মাস আগের। এ নির্মম ঘটনার ভিডিওটি মাদরাসারই অন্য কোন শিক্ষক গোপনে ভিডিও ধারণ করেন। কয়েকদিন পরে এটি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এক পর্যায়ে এতিমখানার যুক্তরাজ্যপ্রবাসী পরিচালকদের দৃষ্টিগোচর হলে তারা তাকে শাস্তির বদলে অব্যাহতি পত্র ধরিয়ে দেন। অব্যাহতিপত্রে ওই অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আব্দুল মুকিত মৌখিকভাবে নির্যাতনের স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন বলে উল্লেখ রয়েছে। এর আগেও তিনি এভাবে শিশুদের শারিরিক ও মানসিক নির্যাতনও করেছেন বলে অব্যাহতিপত্রে উল্লেখ করা হয়।
গত ৬ নভেম্বর মাওলা মোঃ আব্দুল মুকিতের উদ্দেশ্যে প্রেরিত ‘চাকুরি হইতে অব্যাহতি প্রদান’ শীর্ষক ওই অব্যাহতি পত্রে এর আগেও এতিম শিশুদের পেটানোর কথা স্বীকার করে কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করেন, পরিচালনা কমিটি বারবার আপনাকে সতর্ক করার পরও এতিম শিক্ষার্থীদের গালাগালি ও শারিরিক ও মানসিক প্রহার পরিত্যাগ করেননি। আপনি একজন এতিম শিশুকে প্রহারের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় যুক্তরাজ্য প্রবাসী দাতা, প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালখগণের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে তারা আপনাকে তাৎক্ষণিক চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। ওই অব্যাহতিপত্র প্রদান করেন প্রতিষ্টানের সভাপতি মো. কমর উদ্দিন।
এ বিষয়ে মো. কমর উদ্দিন, ঘটনাটি বেশ আগের। এ ঘটনায় নির্যাতনকারী শিক্ষকসহ ভিডিও ধারণকারী শিক্ষকও জড়িত। দুজনের মধ্যে দ্বন্ধ দেখা দেওয়ায় ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। আমরা দুজনকেই মাদরাসা থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। আমি নিজে সমাজসেবাসহ ইউএনও অফিসকেও অবগত করেছি। তিনি বলেন, মোল্লাইনতের লগে চলাফেরা করে বুঝেছি তাদের ভিতর ভালানা। এতিম শিশুদের এভাবে নির্যাতন করলো কিভাবে। তবে ঘটনাটি পুরনো বলে জানান তিনি।
হাজি ইউসুফ আলী এতিমখানা হাফিজিয়া দাখিল মাদরাসার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. গোলাম রসুল বলেন, গত ৬ নভেম্বর মাওলানা মো. আব্দুল মুকিতকে অব্যাহতি দিয়ে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিন শিশুকে নির্যাতনের ভিডিওটি ফেইসবুকে আসার পরই এই সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, ওই শিক্ষকের কতৃকর্ম সম্পর্কে সব কিছুরই সংক্ষেপ তার অব্যাহতিপত্রে উল্লেখ আছে।
ছাতক থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!