বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নে ৮ জন পুরুষ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সঙ্গে সমানে ভোটের মাটে সরব প্রচারণা চালাচ্ছেন দুইজন নারী চেয়ারম্যান প্রার্থী। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সালমা আক্তার চৌধুরী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী চম্পা বেগম ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত স্বজন, সমর্থক ও কর্মীদের নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। নারীদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, অবহেলিত নারীদের মূল¯্রােতে নিয়ে আসাসহ সর্বস্তরের জনগণের জন্য কাজ করার অঙ্গিকার করছেন ভোটারদের। বিশেষ করে নারীরা তাদেরকে আদর আহ্লাদের সঙ্গে গ্রহণ গ্রহণ করতে দেখা গেছে। আগামী ২৮ নভেম্বর সদর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
গৌরারং ইউনিয়নে মোট ভোটার ২৭ হাজার ৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ হাজার ৮১৬ এবং নারী ভোটার ১৩ হাজার ২৪৮ জন। ১২টি ভোট কেন্দ্রে ৮১টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তরুণ সালমা আক্তার চৌধুরী আওয়ামী রাজনীতিতে রাজপথের একজন সক্রিয় নেত্রী। দলীয় প্রতিটি কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকেন তিনি। এবার নির্বাচনী তৎপরতা শুরু হলে দলীয় মনোনয়ন চান তিনি। শেষ পর্যন্ত তার রাজনৈতিক জীবনবৃত্তান্ত পর্যালোচনা করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মনোনয়ন বোর্ড তাকে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন দেন। দলীয় প্রতীক পেয়ে তিনি প্রচারণায় নামলেও দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে তার সঙ্গে প্রচারণায় দেখা যায়নি। তিনি কর্মীদের নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন নির্বাচনী এলাকার মাঠঘাটহাট। তবে তার পক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতা সহসভাপতি নূরুল হুদা মুকুট ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমনকে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। সালমা আক্তার চৌধুরী তার আতœীয়-স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীদের নিয়ে প্রচারণাসহ প্রতিদিন পথসভা অব্যাহত রাখছেন।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সালমা আক্তার চৌধুরী বলেন, বিশ্বনেত্রী-জননেত্রেী শেখ হাসিনা উন্নয়নের মার্কা নৌকা দিয়েছেন আমাকে। আমি নেত্রীর প্রতীক নৌকা নিয়ে ঘরে ঘরে যাচ্ছি। ইউনিয়নের নারী পুরুষ সবাই আমার প্রচারণায় উৎফুল্ল। বিশেষ করে নারীরা আমার মাথা ছুয়ে, জড়িয়ে ধরে দোয়া করছেন। তারা চান প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে সবার জন্য কাজ করি। সালমা আক্তার চৌধুরী আরো বলেন, আমি নেত্রীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমৃত্যু আমার ইউনিয়নের মানুষের পাশে থাকতে চাই। আশা করি ইউনিয়নবাসী আমাকে তাদের সেবা করার সুযোগ দিবেন।
এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে চশমা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন চম্পা বেগম নামের আরেক নারী। ইউনিয়নের সাফেলা গ্রামের এই নারী এলাকায় নানাভাবে সমাজসেবায় নিয়োজিত আছেন। সাফেলা গ্রামের বাসিন্দা এই নারী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিরামহীন প্রচারণা চালাচ্ছেন। নারী জাগরণের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন নারীদের। তার উপস্থিত বক্তব্য উপভোগ করছেন ভোটাররা।
চম্পা বেগম বলেন, দেশে এখন নারীজাগরণের সময়। নারীরা জাগলে দেশ ও সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বিরাজ করে। যে দেশে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী, স্পিকারসহ সরকারে বড়ো স্থানে নারীরা রয়েছে সেখানে তৃণমূলের নারীরা পিছিয়ে থাকবেন কেন। আমি তৃণমূল নারীদের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়ছি। আমি আমার ইউনিয়নের অবহেলিত নারীদের, মেধাবী নারীদের প্রতিভা খোজে বের করে নিজ নিজ স্থানে কাজ করাতে চাই। চাই সুষম উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষকে কাঙ্খিত সেবা দিতে।
এই ইউনিয়নের ভোটার ও উন্নয়নকর্মী মো. আমিনুল হক বলেন, আমাদের ইউনিয়নটি সদর উপজেলার সবচেয়ে বৃহত্তম ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে ৮ জন পুরুষের সঙ্গে সমানে বিরামহীন প্রচারণা চালাচ্ছেন দুইজন নারী। তারা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে, পথসভায় সাবলীল বক্তব্য রাখছেন। তাদের মাধ্যমে তৃণমূলের নারীরা উৎসাহিত হচ্ছেন।
সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার উত্তম কুমার রায় বলেন, আমার উপজেলায় কেবল গৌরারং ইউনিয়নেই দুইজন নারী সরাসরি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন। তারা নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে প্রচারণা চালাচ্ছেন।