বিশেষ প্রতিনিধি::
বৃটেনের ব্যবসা, পর্যটন ও বন্দর মন্ত্রী ভিজয় দারিয়ানানী, এমপি পল ব্রিস্টো, কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজের সিইও সামান্তা কোহেন, এমপি টম হান্টার উপস্থিতিতে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন বলেছেন, র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব সৃষ্টি করেছে আমেরিকা ও বৃটিশরা। তারা এই বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে, দক্ষ করেছে। ইউএসএ র্যাবকে শিখিয়েছে তাদের রুলস এন্ড এনগেজমেন্ট। কিভাবে মানুষের সাথে ব্যবহার করতে হবে, হাউ টু ইন্টারগেশন। এসব কিছু শিখিয়েছে আমেরিকা। মন্ত্রী বলেন, ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট স্বীকার করেছে র্যাবের কারণে আমাদের এখানে সন্ত্রাসবাদ কমেছে। বিদেশিরা এক তরফা তথ্য পেয়ে আমাদের র্যাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। মন্ত্রী যখন সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেছিলেন তখন তার পাশেই উপস্থিত ছিলেন বৃটেনের মন্ত্রী ও দুই এমপি।
শুক্রবার দুপুরে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের নগদীপুর গ্রামে শিক্ষানুরাগী যুক্তরাজ্যপ্রবাসী জিল্লুর রহমানের নাগরিক সংবর্ধনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, বৃটেনের ব্যবসা, পর্যটন ও বন্দর মন্ত্রী ভিজয় দারিয়ানানী, বৃটিশ এমপি পল ব্রিস্টো, কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজের সিইও সামান্তা কোহেন, বৃটিশ এমপি টম হান্টা, সুনামগঞ্জ-সিলেট সংরক্ষিত আসনের এমপি এডভোকেট শামীমা শাহরিয়ার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন প্রমুখ। মন্ত্রী নাগরিক সংবর্ধনাসভা শেষে শিরিলব অতিথিদের নিয়ে চৌধুরী চাইল্ড কিন্ডারগার্টেন, সৈয়দ মনোহর আলী আটগ্রাম মহাবিদ্যালয়, আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াহাব উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, র্যাব বাংলাদেশে নিজেদের কাজ কর্মের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করেছে। তারা খুবই ইফেক্টিভ, ভ্যারি ইফেশিয়ান্ট। তারা দুর্নীতিগ্রস্তও নয়। এ কারণেই তারা জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। তাদের কারণে আমাদের দেশের সন্ত্রাসী কার্যক্রম কমে গেছে। গত কয়েক বছরে হলিআর্টিজানের পর আর কোনো সন্ত্রাসী তৎপরতা হয়নি। এটা সম্ভব হয়েছে র্যাবের কারণেই। মন্ত্রী আরো বলেন, আমেরিকার স্ট্যাড ডিপার্টমেন্ট নিজে র্যাবের কৃতিত্বের কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু এখন কিছু লোক যারা আইন শৃঙ্খলা পছন্দ করে না, যারা সন্ত্রাস পছন্দ করে কিংবা ড্রাগ পছন্দ করে তারাই র্যাবকে পছন্দ না করে বিদেশিদের কাছে নালিশ করছে।
আমেরিকা র্যাবকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের জানাবো। হয়তো এখনো ঠিক মতো তাদের জানাতে পারিনি। কারণ তারা একতরফা তথ্য পেয়েছে। মন্ত্রী বলেন, স্বয়ং আমেরিকায় এক লক্ষ মিসিং হয়। তো এর দায়দায়িত্ব কে নেবে? আর আমাদের দেশে মিসিং যারা হয় পরবর্তীতে দেখা যায় আবার সে বের হয়ে আসছে। গত ১০ বছরে ছয়শত জন মিসিং হয়েছে। মিসিং হওয়া বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন ও হারিছ চৌধুরীর প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী আরো বলেন, হারিছ চৌধুরী গত ১৫ বছর ধরে নিখোঁজ ছিলেন। তিনি ঢাকায়ই আতœগোপন করেছিলেন। হুজুর সেজে তাবলিগ করতেন। গত বছর সেপ্টেম্বরে মারা যান তিনি। সালাহ উদ্দিন সাহেবকে আসামের শিলং পাওয়া গেছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, যারা র্যাবকে পছন্দ করে না, তারাই অপপ্রচার করছে। সব দেশেই ল এন্ড ফোস বিং এজেন্সিতে কিছু মৃত্যু হয়। বাংলাদেশেও কিছু হয়েছে। আগে বেশি ছিলো এখন খুব কম হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, তারপরও যখন এমন মৃত্যু হয় তখন জুডিশিয়ালভাবে সেটি তদন্ত হয়। র্যাব প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের দেশে দুটি ক্ষেত্রে র্যাব অন্যায় করেছিলো, সেই ঘটনার জুডিশিয়াল বিচার হচ্ছে। ওদের শাস্তিও হচ্ছে। র্যাবের যদি রুলস অব অ্যাগেজমেন্টে কোনো কিছরু দুর্বলতা থাকে, কোনো উইকন্যাস থাকে, এই রুলস অব অ্যাগেজমেন্টে যদি কোনো হিউম্যান্ট রাইট ভায়ালেট হয়, অবশ্যই আমরা সেখানে নতুন করে ট্রেনিং দেওয়াবো। কিন্তু কোনো ব্যক্তি বিশেষের উপর হঠাৎ করে এই যে সেংশন গুলো দেয়া হয়েছে সেটা ন্যায় সঙ্গত নয়। যারা র্যাব তথা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নালিশ করেছে সেই বিদেশিদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আপনারা আসেন, দেখেন, লোকজনের সাথে কথা বলেন। আসল ঘটনা উদ্ধার করেন। তারপর আপনারা সিদ্ধান্ত নেন।