অনলাইন ডেক্স::
‘অপহৃত’ কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহারকে উদ্ধারের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ‘আইন শৃঙ্খলাবাহিনী তাদের সব মেকানিজম প্রয়োগ করে তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে আমরা পরিপূর্ণভাবে শনাক্ত করতে পারব।’
সোমবার সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ফরহাদ মজহারকে অপহরণকারীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ট্রেসের মধ্যেই রয়েছে। পুরো বিষয়টিই আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি।’
এদিকে, ফরহাদ মজহারের সন্ধানে খুলনায় একটি এলাকা ঘিরে অভিযান চালাচ্ছেন র্যাব ৬-এর সদস্যরা।
খুলনায় র্যাব ৬-এর অধিনায়ক খন্দকার রফিকুল ইসলাম জানান, নগরীর শিববাড়ী মোবাইল টাওয়ারে ফরহাদ মজহার সর্বশেষ কথা বলেছেন বলে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন। এ কারণে কেডিএ সংযোগ সড়কে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে সব যানবাহন তল্লাশি চালাচ্ছেন। একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি বাড়ি ঘিরে রাখা হয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তা আরো জানান, ফরহাদ মজহারের যে নম্বর দিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে। অভিযান এখনো চলছে।
এর আগে সোমবার বিকেলে ফরহাদ মজহারের রাজধানীর শ্যামলী রিং রোডের এক নম্বর বাড়িতে তাঁর বন্ধু গৌতম দাস সাংবাদিকদের জানান, ভোর ৫টার দিকে শ্যামলীর রিং রোডের এক নম্বর বাসার সামনে থেকে কে বা কারা ফরহাদ মজহারকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। তাঁকে নিয়ে যাওয়ার আধ ঘণ্টা পর ফরহাদ মজহারের মোবাইল ফোন থেকে তাঁর স্ত্রীর কাছে টেলিফোন আসে। ফোনে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।’ এ কথা বলেই তিনি ফোনটি কেটে দেন।
এরপর বিষয়টি আদাবর থানার পুলিশকে জানানো হয় বলে জানান গৌতম। তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসন ফরহাদ মজহারকে উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ফরহাদ মজহার কেন এত ভোরে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে গৌতম দাস জানান, ফরহাদ মজহার রাত ৩ থেকে ৪টার দিকে ঘুম থেকে ওঠেন। এরপর তিনি বিভিন্ন পড়াশোনা ও লেখালেখির কাজ করেন। কিন্তু কেন তিনি আজ এত সকালে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন সে সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেননি গৌতম দাস।
বাড়ির দু-একজন নিরাপত্তারক্ষী ফরহাদ মজহারকে বাসা থেকে বের হতে দেখেছেন বলে জানান তাঁর আরেক বন্ধু মোস্তাহির জহির। কিন্তু তাঁকে কেউ নিয়ে গেছে কি না সেটি তাঁরা দেখেননি। জহির আরো জানান, ভবনের নিচে লাগানো ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় দেখা গেছে যে তিনি ভবন থেকে বের হচ্ছেন।
ফরহাদ মজহারের অপহরণের খবর পেয়ে তাঁর বাসায় যান পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। বিকেলে যখন ফরহাদ মজহার আরেকবার টেলিফোন করেন, তখন সেখানে পুলিশের একজন অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক, আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) উপপরিদর্শক পর্যায়ের তিনজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এ ঘটনায় তার স্ত্রী ফরিদা আখতার আজ রাতে সাংবাদিক সম্মেলন করে ফরহাদ মজহারের সন্ধান চেয়েছেন।