স্টাফ রিপোর্টার ::
জেলায় ব্র্যাকের স্কুলে উপস্থিতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিডডে মিল কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। বুধবার থেকে জেলার সকল বিদ্যালয়ে এ কর্মসূচি চালু করা হয়। ওইদিন দিরাই উপজেলার ভটিপাড়া ইউনিয়নের দত্তগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রোগ্রাম সিলেট ব্র্যাক অফিসের রিজিওনাল ম্যানেজার মো. রফিকুল ইসলাম, সুনামগঞ্জ ব্র্যাক অফিসের জেলা প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান মনির, এইচ আর অফিসার একেএম তোফায়েল আহমেদ, জেন্ডার জাস্টিজ এন্ড ভাইডারসিটি সেক্টর স্পেশালিষ্ট লিপি আক্তার, ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির এলাকা ব্যবস্থাপক মো. রিয়াজুল ইসলাম, দত্তগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মির্জা এম.এ. গালিব প্রমুখ।
ব্র্যাকের কর্মকর্তারা জানান, শাল্লা, দিরাই, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ব্র্যাকের ২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট ৫ হাজার ৫শত জন শিক্ষার্থীর মধ্যে এ মিডডে মিল কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এ কর্মসূচি চলবে ৫ জুলাই থেকে নভেম্বর মাসে চূড়ান্ত পরীক্ষার পূর্ব পর্যন্ত।
ব্র্যাকের পরিচালিত দত্তগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিত ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী অর্পিতা দাস, অনুরূপা দাস, চিত্রা বিশ্বাস, জুমা আক্তার, নিপা রানী দাস, প্রিয়াংকা দাস ও অনিন্দিতা দাস বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে ১০ গ্রামের শিক্ষার্থী রয়েছে। ৪-৫ কিলোমিটার প্রশস্ত হাওরপাড়ি দিয়ে আমাদের এ বিদ্যালয়ে আসতে হয়। এ বিদ্যালয় না থাকলে আমাদের লেখাপড়া করার সুযোগ ছিল না। হাওরের মাঝখানে অবিস্থিত এ বিদ্যালয়ে আমরা লেখাপড়া করতে ব্র্যাকের ফ্রি নৌকা দিয়ে যাতায়াত করে আসছি। এখন খাবারেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্র্যাকের এসব উদ্যোগে আমরা খুশি।’
এ সময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত অভিভাবক দীপক চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমাদের হাওরপাড়ের ছেলে-মেয়েরা দত্তগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে আসছে। এতে আমাদের শিক্ষার হার বাড়ছে। আগে হাওরপাড় এলাকায় শিক্ষা অর্জনের সুযোগ ছিল না। এ সময় ছিল বাল্য বিয়ের হিড়িক। এখন বাল্য বিয়ে অনেকটা কমেছে। শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়ার জন্য ব্র্যাকের উদ্যোগে নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন খাবারেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ এ সময় একই কথা বলেন অভিভাবক পুষ্প রানী দাস, গীতা রাণী দাস, প্রমিলা রাণী দাস, প্রণতি রানী দাস।
দত্তগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মির্জা এম.এ. গালিব বলেন, ‘আমাদের এ বিদ্যালয়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার মুরাদপুর, দিরাই উপজেলার আনোয়ারপুর, দত্তগ্রাম, পানগাঁও, শরীফপুর, পাথারিয়া, ধুলপুসি, ধলকুতুব, সুতারগাঁও, চাতলপাড়সহ ১০টি গ্রামের ৩০৯জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। এতে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
শিক্ষা প্রোগ্রাম সিলেট অফিসের রিজিওনাল ম্যানেজার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয় বন্ধ বার ছাড়া শিক্ষার্থীদের সপ্তাহের খাবার তালিকায় রয়েছে সবজি খিছুরী, ডিম-বিস্কুট, ডিম-খিছুরী, কলা-বিস্কুট, ডিম-খিছুরী, কলা-বিস্কুট। এ ছাড়াও হাওরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের ফ্রিভাবে যাতায়াতের জন্য বিভিন্ন স্থানে ২৯টি নৌকার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে।’