হাওর ডেস্ক ::
করোনাভাইরাস (কভিডে-১৯) পরিস্থিতিতে পারিবারিক আর্থিক সহায়তার জন্য দেশে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা বেড়েছে। করোনার আগে রাজধানী ঢাকায় শিশুশ্রমের হার ছিল ৪৪ শতাংশ। বর্তমানে এ হার ৫৬ শতাংশ। কভিডের আগে ৫৭ শতাংশ শিশুশ্রমিক বিদ্যালয়ে যেত। বর্তমানে প্রায় ৮৯ শতাংশ শিশুশ্রমিক বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না।
গতকাল রবিবার রাজধানীর হোটেল লেকশোরে এডুকেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এডুকো) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের শিশুশ্রম : অভিজ্ঞতা ও করণীয়’ বিষয়ক অনুষ্ঠানে করোনাকালীন এবং এর পরবর্তী সময়ে শিশুশ্রমের পরিস্থিতির ওপর এক গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। এতে এই চিত্র উঠে এসেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে গবেষণাপত্র তুলে ধরেন এডুকো বাংলাদেশের ডিরেক্টর অব প্রগ্রামস ফারজানা খান। তিনি বলেন, বর্তমান মহামারি বিভিন্ন পরিবারে এক অস্থিরতার সৃষ্টি করেছে। ফলে অনেকেই পারিবারিক উপার্জন বাড়ানোর জন্য শিশুশ্রমের আশ্রয় নিচ্ছে।
এডুকো বাংলাদেশ ঢাকা শহরের ৪৪৩ জন শিশুশ্রমিকের ওপর জরিপ করেছে। এতে দেখা গেছে, প্রায় ৫৬ শতাংশ শিশুশ্রমিক সংসারে মা-বাবাকে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন কাজ করেছে। কেননা কভিডের কারণে তাদের পরিবারের আয় কমে গেছে। প্রায় ৫৩ শতাংশ শিশুশ্রমিক লকডাউনের সময় কোনো কাজ করার সুযোগ পায়নি। ফলে তাদের জীবনধারণ খুবই কঠিন ছিল। কভিডের সময় প্রায় ২৭ শতাংশ শিশুশ্রমিকের আয় অর্ধেকে নেমে গেছে। প্রায় ৭০ শতাংশ শিশুশ্রমিক বা তাদের পরিবার লকডাউনের সময় কোনো ধরনের সহায়তা পায়নি। কভিডের আগে ৫৭ শতাংশ শিশুশ্রমিক স্কুলে যেত। বর্তমানে প্রায় ৮৯ শতাংশ শিশুশ্রমিক স্কুলে যাচ্ছে না।
বক্তব্যে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় শিশুশ্রম নিরসনে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। শিশুশ্রম নিরসনে সরকার জোর দিয়েছে কারিগরি শিক্ষা এবং বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার ওপর। শিশুশ্রম নিরসনে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ। এ ক্ষেত্রে এনজিওরা অনেক ভালোভাবে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, সরকার শিশুশ্রম নিরসনে অনেক কাজ করছে। শিশুদের জন্য সেফটিনেট প্রগ্রাম চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দরিদ্রতা কমানো হয়েছে এবং এটি শিশুশ্রম নিরসনে অনেক ভূমিকা রাখবে। সরকারের পাশাপাশি এনজিওরা শিশুশ্রম নিরসনে অনেক কাজ করছে। এভাবে কাজগুলো চলমান থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে এসডিজি গোল অর্জন করা সম্ভব।