বিশেষ প্রতিনিধি::
হাওরের সকল বাঁধে নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। শনিবার সকাল ১১ টায় দেখার হাওরের ঝূঁকিপূর্ণ আসানমারা বেরিবাঁধ পরিদর্শনে এসে প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, জনপ্রতিনিধি ও কৃষকদের প্রতি এই আহ্বান জানান তিনি। পরে তিনি শান্তিগঞ্জ ও জগন্নাথপুর উপজেলার একাধিক হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় কৃষকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সালে যখন হাওরে দুর্যোগ ঘটেছিল তখন বঙ্গোপসাগরের মতো রূপ নিয়েছিল হাওর। তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছুটে এসে ঘোষণা দিয়েছিলেন এক বছর আপনাদের খাওয়াবেন। তিনি কথা রেখেছিলেন। এই ঘটনা দেশের জন্য একটি রেকর্ড। এবারও হাওরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটলে সরকার আপনাদের ফেলে যাবেনা। মন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারের কাছে চাল, গমসহ খাদ্য মজুদ আছে। প্রয়োজনে ২০১৭ সালের সরকারি সহায়তার পুনরাবৃত্তি হবে। মন্ত্রী বলেন, ভয় পাবেন না। আমাদের সক্ষমতা ও দায়িত্ব বোধ বেড়েছে।
এসময় পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম, শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নূর হোসেন প্রমুখ।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, আমরা প্রকৃতির কাছে অসহায়। আগামী ৫-৭ দিন আমাদের হাওরের জন্য সংকটকাল। এজন্য ফসল ঘরে তোলতে সবাইকে দ্রুত কাজ করতে হবে। তবে হাওরের সব জায়গায় প্রাকৃতিক কারণেই স্থায়ী বাঁধ দেওয়া সম্ভব নয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা বাঁধ দেই যাতে পাহাড়ি ঢলের প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলাতে পারে। আগামী বছরও আমরা বাঁধ দিবো। মন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের কৃষক মাঠে পরিশ্রম করেন। মহিলারাও মাঠে নেমেছেন। এটা বাংলার আবহমান কালের চিত্র। ইতোমধ্যে কৃষিতে পরিবর্তন এসেছে। ধানকাটার যন্ত্র নেমেছে। এটি দ্রুত ধান কাটতে পারে। কৃষি বিজ্ঞানীয় সময় কমিয়ে নতুন জাতের ধান উদ্ভাবনে কাজ করছেন। এখন কৃষিতে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, কৃষি বিভাগ, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি সবাই মিলে হাওরের এই সংকটকালে কাজ করতে হবে। কে কতটুকু কাজ করলাম এখন মাপজোকের সময় নয়। মন্ত্রী বলেন, দিনে রাতে আমাদের কাজ করতে হবে। ফসলরক্ষা বাঁধ গুলোর উপর নজর রাখতে হবে। ফাটল ধরলেই আমাদের অফিসাররা বাশ বস্তা দিয়ে কৃষকদের সহায়তায় কাজ করবে।
হাওরে ধান কাটতে আসা শ্রমিকদের দ্রুত পার করে দেওয়ার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এখনো বহাল রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ভিআইপি মর্যাদায় শ্রমিকদেরকে আসা যাওয়ার পথ সহজ করতে হবে। প্রশাসন এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিবে। তাছাড়া এর মধ্যে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরকে সরকার সহায়তা দিতে শুরু করেছে বলে জানান মন্ত্রী। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ও আর্থিকভাবে দুর্বল যারা তাদের তালিকা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।