বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলা শহরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন ঝুমা সরকার (৩৫) ও তার তিন বছরের ছেলে অন্তর সরকার। তার প্রথম শ্রেণি পড়–য়া মেয়ে পুজা সরকারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রবিবার দুপুরে জামালগঞ্জ উপজেলা সদরের নতুনপাড়া আবাসিক এলাকায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। ঝুমা সরকার দিরাই উপজেলার নূপুর তালুকদারের স্ত্রী। তিনি জামালগঞ্জে বাবার বাড়ি থেকে একটি বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) কাজ করতেন। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবারে মাতম চলছে। পরিবার ও এলাকাবাসী পল্লীবিদ্যুতের অবহেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা প্রতিবেশী তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ জানান, রবিবার দুপুরে আমি হঠাৎ শোরগোল শুনতে পাই। এসময় বাসা থেকে বেরিয়ে দেখি এক নারী সন্তানকে কোলে নিয়ে মাটিতে পড়ে গেছেন। তার শরিরে আগুন। আরেক সন্তান মাটিতে ছটফট করছে। এসময় তারা যেখানে বিদ্যুতায়িত হন সেখানে নলকুপের উপর পল্লী বিদ্যুতের ছেড়া লাইন ঝুলছিল। এই লাইনে বিদ্যুতায়িত হয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি জানান, এই অবস্থা দেখে কেউ এগিয়ে আসছিলনা। আমি বুঝতে সক্ষম হই ছেড়া লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ আছে। তাই জামালগঞ্জের স্থানীয় পল্লী বিদ্যুতের সংশ্লিষ্টদের ফোন দিলে কেউ রিসিভ করেনি। পরে পল্লী বিদ্যুতের সুনামগঞ্জ অফিসের জেনারেল ম্যানেজারকে ফোন করে দ্রুত লাইন বন্ধ করি। এসময় স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে পূজা সরকারকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে জামালগঞ্জ হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেহ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহত ঝুমা রানী সরকারের পিতা গৌরাঙ্গ সরকার জানান, আমার মেয়ে তার ছেলে ও মেয়েকে ¯œান করাতে নলকুপে গিয়েছিল। শনিবার ভোররাতে কালবৈশাখি ঝড় হয়। এই ঝড়ে নতুনপাড়ার পল্লীবিদ্যুতের লাইন ছিড়ে নিচে পরে যায়। দুপুরে ঝুমা সরকার বাসা থেকে বেরিয়ে তার প্রতিবেশির নলকুপে দুই সন্তানকে ¯œান করাতে এসে ছেড়া লাইনে বিদ্যুতায়িত হয়। আমার মেয়ে ও নাতির মৃত্যুর জন্য এজন্য পল্লী বিদ্যুৎ দায়ী। ভোরে লাইনটি ছিড়লেও দুপুর পর্যন্ত তারা মেরামত করতে আসেনি এবং ছেড়া লাইনে বিদ্যুৎ ছিল বলে জানান তিনি। পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
জামালগঞ্জ থানার ওসি মীর মো. আব্দুন নাসের জানান, খবর পাওয়ার পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত মা ও ছেলেকে উদ্ধার করেছে। তাদের মরদেহ ময়না তদন্তের পাঠানো হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার সুজিত কুমার দাস বলেন, আমাদের লাইনে বিদ্যুতায়িত হয়ে মা ও ছেলের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠায় আমরা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।