বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও বাঁধ ভেঙ্গে ফসল তলিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গঠিত পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উচ্চতর তদন্ত কমিটি তদন্তকাজ শুরু করেছে। মঙ্গলবার সকালে তদন্ত কমিটির প্রধান পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা সালমা জাফরিন কমিটিরি অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে ধর্মপাশা উপজেলার চন্দ্রসোনার থাল হাওরের ডুবাইল বাঁধ পরিদর্শন করেন। আগামীকাল বুধবার দিরাই ও শাল্লা উপজেলার বিভিন্ন হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করবে তদন্ত দল। তারপর ফিরে গিয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিবেন।
এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, কমিটির সদস্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী এনায়েত উল্লাহ, সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) দেবজিৎ সিনহা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহা পরিচালক মাহবুবুর রহমান, সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আয়োয়ার উল হালিম ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোবাশশেরুল ইসলাম।
চন্দ্রসোনার থাল হাওরের ডুবাইল বাধ পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দন্ত কমিটির প্রধান পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা সালমা জাফরিন বলেন, আমরা তদন্তকাজ পরিচালনার জন্য সরাসরি হাওরে এসেছি। বিভিন্ন বাঁধ পরিদর্শন করা শুরু করেছি। কোন অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়ে থাকলে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা দ্রুততম সময়ে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেব। অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতরা ছাড় পাবেনা।
এসময় তিনি আরো জানান, মেঘালয়ে গত সপ্তাহে প্রবল বর্ষণ হয়েছে। এই বর্ষণের ফলে পাহাড়ি ঢলে নি¤œাঞ্চল সুনামগঞ্জের নদ নদীতে পানি বেড়েছে। এতে ঝূকির মুখে পড়ে বোরো ফসলরক্ষায় নির্মিত অস্থায়ী বাঁধ। এখন এই বাঁধগুলোতে কোন অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়ে থাকলে আমরা মাঠ পর্যায় থেকে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমা দেব। এসময় তদন্ত কমিটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, বাধ নির্মাণে জড়িত পিআইসির লোকজনসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষদের সঙ্গেও কথা বলেন।
এদিকে গত ১০ এপ্রিল জেলা প্রশাসন গঠিত ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটিও আলাদাভাবে তদন্ত কাজ শুরু করেছে। এই কমিটির প্রধান স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. জাকির হোসেন তদন্ত দল নিয়ে বিভিন্ন হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করেছেন। তিনি হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, গাফিলতি ও তদারকিতে অবহেলার ঘটনা অনুসন্ধান করবেন। তাদেরকে ২৬ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটি আগামীকাল দিরাই ও শাল্লা উপজেলার বিভিন্ন হাওরের ফসলরক্ষা বাধ পরিদর্শন করবেন। তারা সংশ্লিষ্ট লোকজনসহ কৃষকদের সঙ্গেও কথা বলবেন।