স্টাফ রিপোর্টার::
২২ এপ্রিল শুক্রবার পর্যন্ত সরকারি হিসেবে সুনামগঞ্জে ৫০ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত হাওরে ৬৪ ভাগ এবং হাওরের বাইরে ১০ ভাগসহ গড়ে ৫০ ভাগ বোরো ধান কর্তন হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। তবে এই প্রতিবেদনে মাঠের প্রকৃত তথ্য ওঠে আসেনি বলে জানিয়েছেন কৃষক ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। তারা জানিয়েছেন হাওরে এখনো ৪০ ভাগের বেশি ধান কাটা যায়নি। কারণ অনেক স্থানে ধান এখনো কাচা রয়ে গেছে। তবে বৈরী প্রকৃতির কারণে সবগুলো বাধ ঝূকির মধ্যে পড়ায় কৃষকরা দ্রুত ধান কাটার চেষ্টা করছেন। এদিকে সরকারি তথ্যে দেখা গেছে যে উপজেলায় বাঁধ ভেঙ্গে বেশি ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে সেই উপজেলাতেই ধান কর্তনের পরিমাণ বেশি লক্ষ্যণীয়।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে জেলায় সর্বমোট ২ লাখ ২২ হাজার ৫০৮ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাওরের ভিতরে ১ লাখ ৬৫ হাজার ২৩০ হেক্টর এবং হাওরের বাইরে ৫৭ হাজার ৫৭৫ হেক্টর। ২২ এপ্রিল শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় হাওরের ভিতরে ১ লাখ হাজার ১১ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান কাটা হয়েছে। হাওরে কর্তনের হার ৬৪ ভাগ এবং হাওরের বাইরে ১০ ভাগসহ গড়ে ৫০ ভাগ বোরো ধান কাটা হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
এদিকে ধান কর্তন ও হাওরের বেরিবাঁধ ভেঙ্গে ফসলহানীর ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে উপজেলায় হাওর ভেঙ্গে ফসলডুবির ঘটনা ঘটেছে সেসব উপজেলায় কর্তন হয়েছে বেশি। সরকারি হিসেবে দিরাই উপজেলায় বাঁধ ভেঙ্গে হাওরের ফসলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। আবার কর্তনও হয়েছে বেশি। এ উপজেলায় ১৪ হাজার ৩৫৭ হেক্টর কর্তন হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ধর্মপাশায় বাঁধ ভেঙ্গে ১ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে, সরকারি হিসেবে এই উপজেলায় ধান কাটা হয়েছে ১৫ হাজার ১০২ হেক্টর জমির বোরো ধান।
শাল্লা উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু বলেন, দিনের গতি প্রকৃতি ও নদীর ফুলে ওঠা দেখে পুরোপুরি পাকার আগেই কাঁচা ধান কাটছেন কৃষক। আমাদের এলাকায় সব মিলিয়ে ৪০ ভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে। এই সপ্তাহ ভালো থাকলে এবং ঝূকিপূর্ণ বাঁধগুলো টিকে থাকলে হাওরের অবশিষ্ট ফসল কাটতে সক্ষম হবেন কৃষক।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, আমরা মাঠে ঘুরে, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ক্ষয়-ক্ষতি ও ধান কর্তনের প্রতিবেদনি তৈরি করি। ধান দ্রুত কাটার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বৈরী প্রকৃতির কারণে কৃষক ফসলের মায়ায় সবাইকে নিয়ে নেমেছেন। তাছাড়া সরকারিভাবে ৪৩৫টি কম্বাইন হার্ভেস্টর, ১০৮টি রিপার যন্ত্র দ্রুত গতিতে ধান কাটতে সহায়তা করেছে। এর সঙ্গে বাইরের জেলার প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক এবং জেলার পোনে তিন লাখ শ্রমিকসহ কৃষকরাও ক্ষেতে নেমে ধান কাটছেন। এ কারণে হাওরে ধান কাটা দ্রুত হচ্ছে।