1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
জামালগঞ্জে নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা সিলেটে শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসারকে অপসারণের দাবিতে গণস্বাক্ষর কার্যক্রম ২৫০ শয্যা হাসপাতালে সেবার মান বাড়ানোর দাবিতে মতবিনিময় সুনামগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ বন্যার্তদের সহায়তায় সুনামগঞ্জে শিল্পকলা একাডেমির ব্যতিক্রমী ছবি আঁকার কর্মসূচি জগন্নাথপুরে শিক্ষিকা লাঞ্চিত: দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সকল কালাকানুন বাতিলের দাবি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পান্নার মরদেহ হস্থান্তর করলো মেঘালয় পুলিশ কাদের সিদ্দিকী বললেন: বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয় বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বন্যায় ২০ লাখ শিশু ঝুঁকিতে : ইউনিসেফ

আবুল মাল আবদুল মুহিত একটি অসাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠান: এম এ মান্নান

  • আপডেট টাইম :: রবিবার, ১ মে, ২০২২, ১০.৪৮ এএম
  • ২৮৭ বার পড়া হয়েছে

চলে গেলেন একজন অর্থনীতিবিদ, কূটনীতিক, ভাষাসৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা ও পরিবেশবিদ সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি দেহান্তরিত হলেও তাঁর সুদীর্ঘকালের কর্ম আমাদের প্রজন্মপরম্পরায় পথ দেখাবে।

১৯৩৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সিলেটের এক পরিচিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ছাত্রজীবনে মেধাবী ছাত্র জনাব মুহিত ১৯৫১ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে তৎকালীন সারা প্রদেশে আইএ পরীক্ষায় প্রথম স্থান, ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ (অনার্স) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম এবং ১৯৫৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এমএ পাস করেন।

চাকরিরত অবস্থায় তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নসহ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমপিএ ডিগ্রি লাভ করেন।
জনাব মুহিত পাকিস্তান পরিকল্পনা কমিশনের চিফ ও উপসচিব থাকাকালে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে বৈষম্য বিরাজমান ছিল তাঁর ওপর ১৯৬৬ সালে একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন করেন। সংবিধানের বাধ্যবাধকতা পালনে পাকিস্তান ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে উপস্থাপিত এটিই ছিল এ বিষয়ে প্রথম প্রতিবেদন। পাকিস্তানের ওয়াশিংটন দূতাবাসের তিনি প্রথম কূটনীতিবিদ, যিনি আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় ১৯৭১-এর জুন মাসে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন। তাঁর পদত্যাগ তখন মুক্তিযোদ্ধাদের উজ্জীবিত করেছিল।

অর্থনৈতিক কূটনীতিতে জনাব মুহিত সবিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থায় তিনি একজন সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব। লেখক হিসেবেও জনাব মুহিত সমান পারদর্শী। মুক্তিযুদ্ধ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ইতিহাস, জনপ্রশাসন এবং রাজনৈতিক সমস্যা বিষয়ক গ্রন্থসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর ৩০টির বেশি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।

আবুল মাল আবদুল মুহিত আমার অগ্রজ, পেশাগত জীবনে আমার জ্যেষ্ঠ এবং এক অর্থে দীর্ঘকালীন শিক্ষক। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অগ্রসৈনিক, কলমযোদ্ধা এক প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক ‘প্রতিষ্ঠান’। আবহমান বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম পুরোধা পুরুষ ছিলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি রাষ্ট্রের উচ্চ মর্যাদার স্বাধীনতা পদকের মতো অনন্য পদকে ভূষিত হয়েছেন। অন্যদিকে প্রকৃত অর্থে একজন পরিশীলিত নাগরিক হয়েও সিলেট অঞ্চলের লোকজ সংস্কৃতিতে তাঁর গভীর পাণ্ডিত্য ছিল; তিনি এই সংস্কৃতির প্রসারে জোরালো অবদান রেখেছেন। বাংলাদেশের খেলাধুলার অঙ্গনেও তাঁর শক্তিশালী ভূমিকা ছিল। পরিণত বয়সে উচ্চ দায়িত্ব পালনের সময় খেলাধুলার প্রসারে তিনি সহায়ক ভূমিকা রেখেছেন। কনিষ্ঠ সহকর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করার সময় আমি তাঁর থেকে বহু কিছু শিখেছি। কোনো কোনো সময় কনিষ্ঠ সহকর্মীর পরামর্শও তিনি হাসিমুখে গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ তথা কর্মজীবী এবং প্রধানত গ্রামীণ নিম্নআয়ের মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও মমত্ববোধ ছিল তাঁর। অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বিশেষ করে বাজেট তৈরিতে এই সব মানুষের কল্যাণে আমাদের উভয়ের দায়বোধ ও কর্মপ্রচেষ্টা একটি ‘অলিখিত চুক্তি’র মতো সার্বক্ষণিক বিরাজমান ছিল। চিত্রকলা ও সংগীতের প্রতিও সম্মানজক জ্ঞান ও আগ্রহ ছিল তাঁর। বাংলাদেশের শিল্পী ও সাহিত্যিক সমাজের সঙ্গে বন্ধুত্ব, পারস্পরিক সম্মানবোধ ও সহযোগিতার সম্পর্ক ছিল এই গুণী মানুষের। রাতভর মাঠে বসে ধ্রুপদি সংগীতের স্বাদ গ্রহণ করতেন তিনি। আন্তর্জাতিক মানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনেও অকাতরে সহযোগিতা করেছেন; প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। সিলেট অঞ্চলের সকলেই জানেন, অসাম্প্রদায়িক এই কৃতী পুরুষের সঙ্গে সিলেটের মনিপুরী সম্প্রদায় ও অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আত্মিক সম্পর্ক ছিল।

আমার ধারণা, ধর্মান্ধ না হয়েও কিভাবে একজন মানবপ্রেমী ধার্মিক হওয়া যায়, এর অন্যতম শ্রেষ্ঠ উদাহরণ তিনি। মামাবড়ি সুনামগঞ্জের (জগন্নাথপুর) প্রতি ছিল তাঁর অপার স্নেহ-ভালোবাসা। আমি সুনামগঞ্জের একজন সন্তান হিসেবে কর্মক্ষেত্রে তাঁর এই আগ্রহের অনেক প্রমাণ পেয়েছি। সময়োত্তীর্ণ প্রজ্ঞা ও গভীর জ্ঞানের অধিকারী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাই নিরন্তর। তিনি জীবদ্দশায় সৃজনের যে অক্ষয় স্মারক রেখে গেছেন, জাতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় স্মরণ করবে। তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।

লেখক : পরিকল্পনামন্ত্রী

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!