বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণ কমার ফলে প্রধান নদী সুরমার পানি বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার কমেছে। বুধবার বিকেল ৩টায় এখনো বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবং পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় ছাতক ও সুনামগঞ্জ শহরের প্লাবিত হওয়া নিচু এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এই পানি ভাটিতে গিয়ে চাপ সৃষ্টি করেছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এদিকে ৫টি উপজেলার নন হাওরে আবাদকৃত ইরি প্রজাতির প্রায় ৬৭৫ হেক্টর জমির বোরো ধান পাহাড়ি ঢলে নিমজ্জিত হয়েছে। এতে বড়ো ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ৫টি উপজেলার পোনে দুইশ পুকুরের মাছও ভেসে গেছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-২ শামসুদ্দোহা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের আবহাওয়া ও বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলসহ আসাম, মেঘালয়ে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এতে নদ নদীর পানি আবারও বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তবে গত ২৪ ঘন্টায় বর্ষণ ও ঢল না থাকায় সুরমা নদীর পানি কমেছে। গতকাল যে এলাকা গুলো প্লাবিত হয়েছিল তা থেকেও পানি নামছে। এই পানি এখন ভাটিতে গিয়ে চাপ সৃষ্টি করে কাচা রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর ও ছাতক উপজেলার প্রায় ৬৭৫ হেক্টর জমির পাকা ইরি বোরো ধান নিমজ্জিত হয়েছে। পানি না নামলে এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তবে নিমজ্জিত ক্ষেতের ধান কেটে তোলার চেষ্টা করছেন কৃষকরা বলে জানান তিনি।
সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুনীল ম-ল জানান, দোয়ারাবাজার উপজেলায়র শতাধিক পুকুরসহ সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুর, ছাতক ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পোনে দুইশ খামারের মাছ ভেসে গেছে। আমরা উপজেলা কর্মকর্তাদের প্রকৃত ক্ষয়-ক্ষতির তথ্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছি।
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বন্যা সতর্কতার জারির পর আমরা মন্ত্রণালয়ে ত্রাণ পাঠানোর চিঠি দিয়েছিলাম। বুধবার আমাদেরকে নগদ ১০ লক্ষ টাকা, ২০ মে.টন চাল, ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ এসেছে। এর আগে আমরা নগদ আড়াই লক্ষ টাকা ও ১৫ মে.টন চাল বন্যার্তদের বিতরণের জন্য পাঠিয়েছি।