বিশেষ প্রতিনিধি::
ভয়াবহ বন্যায় বিদ্যুৎ ও মোবাইল টেনওয়ার্ক বন্ধ থাকায় দেশ-বিদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল সুনামগঞ্জ। টানা বিদ্যুৎহীন ছিল ৫ দিন। তাই বন্যাক্রান্ত স্বজনদের কোনও খোজ খবর নিতে পারছিলেননা কেউ। এই সময়ে বন্যায় ভেসে গিয়ে, নৌকা ডুবে, বজ্রপাতে জেলায় ২৬ জন মারা গেছেন। তবে মৃতদের মধ্যে অর্ধেকরও বেশি বন্যা কবলিত দোয়ারাবাজার উপজেলার বাসিন্দা। এই উপজেলায় ১৪জন মৃত্যুবরণ করেন বন্যাজনিত কারণে। দোয়ারাবাজার উপজেলার পর বেশি লোক মারা গেছে শান্তিগঞ্জ উপজেলায়। এই উপজেলায় ৬ জন মারা গিয়েছিল। তবে মৃতদের মধ্যে ১১ জনই শিশু।
সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ জুন থেকে ২১ জুনের মধ্যে সুনামগঞ্জে বন্যা দেখা দেয়। ১৭ জুনের মধ্যে পুরো জেলা বন্যায় প্লাবিত হয়। এই সময়ে ১৮জন লোক নানা ভাবে বন্যার পানিতে ডুবে মারা যায়। কেউ নৌকায় যাতায়াতকালে, কেউ বা সড়কপথে যাতায়াত করতে গিয়ে ঢলের পানিতে ভেসে মারা যায়। এছাড়া এই সময়ে ঝড় ও বজ্রপাতে ৭জন এবং ডায়রিয়ায় ১জন মারা যান। সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের আব্দুল হালিম (৫৫), রাজনগর গ্রামের এসএসসি পরীক্ষার্থী তামান্না আক্তার, তার ছোট ভাই সৌরভ মিয়া, ইমাম উদ্দিন, টেংরাটিলা গ্রামের পুলিশ কনেস্টেবল মো. আবুল কাশেম, শরিফপুর গ্রামের সালমান হোসেন, পেকপাড়া গ্রামের হনুফা বেগম, জিরাগাও গ্রামের আনফর আলী, আলমখালি গ্রামের জাহানারা বেগম, পুটিপশি গ্রামের খুশি রানী দাস, দক্ষিণ কলোনীর শুকুর আলী ওরফে আব্দুন নূর, টেংরাটিলা গ্রামের সালমান হোসেন, একই গ্রামের জরিফ আহমদ এবং চাইরগাও গ্রামের শফিক মিয়া বন্যার পানিতে তলিয়ে মারা যান। তাদের লাশ পরে ভেসে ওঠে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার সদরপুর গ্রামের গিয়াস মিয়া, বাগেরকোণা শত্রুমর্দন গ্রামের সুইটি আক্তার, সিচনী গ্রামের ঝন্টু দাস, মুক্তাখাই গ্রামের শফিকুল ইসলাম, একই গ্রামের মিম আক্তার ও তেরহাল গ্রামের মজমিল আলী। এছাড়া তাহিরপুর উপজেলার সুন্দরপাহাড়ি গ্রামের রিপা বেগম, আমিরুল ইসলাম এবং তাওহিদা বেগম মারা যায়।
জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ গ্রামের লুবনা বেগম, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার তালেরতল গ্রামের মিম আক্তার মারা যায়।
সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. আহম্মদ হোসেন বলেন, আমাদের মাঠকর্মী, স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি ও মৃতদের স্বজনদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে বন্যায় যারা মারা গেছেন তাদের তালিকা কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। যারা মারা গেছেন বেশিরভাগ মানুষই দোয়ারাবাজার ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।