ধর্মপাশা প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দেওলা গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব তরিকুল ইসলাম পলাশের বিরুদ্ধে একটি জলাশয় থেকে জাল ও মাছ লুটপাটকরা সহ নানা অনিয়ম তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৭অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা প্রেস ক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা ও জাতীয় শ্রমিক লীগের ধর্মপাশা উপজেলা কমিটির সম্মানিত সদস্য কামাল হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাতীয় শ্রমিক লীগ নেতা কামাল হোসেন উল্লেখ করেছেন, উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য কামাল হোসেন। তিনি জাতীয় শ্রমিক লীগের উপজেলা কমিটির সদস্য পদেও রয়েছেন। উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের রাজাপুর মৌজার সেলিমখালীর খাল ও শালকুমড়ার কাড়া নামক ৮একর ১৩শতক জলাশয়টি চলতি বঙ্গাব্দের ৩০চৈত্র পর্যন্ত খাসকালেকশনের মাধ্যমে গত ৮ আগস্ট তিনি ইজারা পান। এটিতে বাঁশ,গাছের ডালপালা ফেলে এবং পাহারাদার নিয়োজিত করে তিনি সেখানে মৎস্য সংরক্ষণ করে আসছিলেন। নানাবিদ কারণ দেখিয়ে তাঁর খাসকালেকশ নেওয়া জলাশয়টি গত ২২আগস্ট বাতিল করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। খাসকালেকশনটি বাতিল করায় ওই শ্রমিকলীগ নেতা এ নিয়ে গত ১৩সেপ্টেম্বর খাসকালেশনটির বৈধতা নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি মামলা করেন। গত ২৭সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত তাঁর পক্ষে রায় দেন। আদালতের রায় পেয়ে তিনি এটিতে পূণরায় দখলে যান। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জের ধরে ধর্মপাশা উপজেলার দেওলা গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব তরিকুল ইসলাম পলাশ গত ৫অক্টোবর বিকেল চারটার দিকে ২০/২৫জন লোক নিয়ে সেলিমখালীর খাল ও শালকুমড়ার কাড়া জলাশয়টিতে যান। এ সময় তারা ওই জলাশয় থেকে মাছ শিকারের জন্য পেতে রাখা একটি বড় জাল ও জালের মাছ নিয়ে আসেন। শুধু তাই নয়, তারা জলাশয়ে থাকা বাঁশ ও ডালপালা তুলে নিয়ে জলাশয়টির লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করেছেন।
জাতীয় শ্রমিক লীগের উপজেলা কমিটির সদস্য কামাল হোসেন বলেন, বৈধভাবে খাসকালেশনে আমার ইজারা নেওয়া জলাশয় থেকে জাল ওমাছ লুটসহ যে ঘটনাটি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা তরিকুল ইসলাম পলাশ ঘটিয়েছেন এটি আমি ওইদিনই মুঠোফোনে ইউএনও স্যার ও ওসি স্যারকে জানিয়েছি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে তিনি এই কাজটি করেছেন। এ ছাড়া তরিকুল ইসলাম পলাশ উপজেলার চন্দ্র সোনার থাল হাওরের ৮৫.৮৬.৮৭ ও ৮৮নং ফসলরক্ষা বাঁধের কিছু অংশ কেটে দিয়ে ভিম জাল পেতে লোকজন নিয়োজিত করে অবৈধভাবে সেখানে তিনি মাছ শিকার কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন।
তরিকুল ইসলাম পলাশ তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ গুলো মিথ্যা ও বিত্তহীন।
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, সাবেক ইউপি কামাল হোসেন তার জলাশয়ের ঘটনাটি আমাকে মুঠোফোনে জানিয়েছেন। তবে তিনি এ নিয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ আমার কাছে দেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মো.মুনতাসির হাসান বলেন,হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ কেটে মাছ শিকার করা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। সরকারি সম্পদ বিনষ্ট করার কাজে যারাই জড়িত থাকুক না কেন ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।