হাওর ডেস্ক ::
আমন মৌসুমে প্রায় ৬৫ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ফলন হচ্ছে প্রায় ২.৭৬ টন। এই হিসাবে এবার পুরো আমন মৌসুমে ধানের রেকর্ড উৎপাদন হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান (ব্রি)। এর ফলে আগামী জুন পর্যন্ত দেশে চালের কোনো সংকট হবে না।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ৫৯ লাখ হেক্টর জমিতে আমন চাষের পর চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক কোটি ৬১ লাখ টন। তবে উৎপাদন হতে পারে এক কোটি ৬৩ লাখ টন। বাড়তি উৎপাদনের পরও বাজারে ধানের দাম বেশ চড়া রয়েছে। মোকাম ও অঞ্চলভেদে ধানের দামে পার্থক্য থাকলেও গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে প্রতি মণ ধানের দাম ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি। মোটা চালের প্রতি মণ ধান গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে এক হাজার ১৫০ থেকে এক হাজার ৩৫০ টাকায়, মাঝারি চিকন চালের ধান এক হাজার ৩৫০ থেকে এক হাজার ৪৫০ টাকায় এবং সুগন্ধি ধান দেড় হাজার টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্রির গবেষণার তথ্য বলছে, আগামী জুন পর্যন্ত দেশে চালের কোনো সংকট হবে না। এবার আমনে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদনের পাশাপাশি আউশ উৎপাদন ৩০ লাখ টন এবং বোরো দুই কোটি চার লাখ টন বিবেচনায় নিয়ে দেশে চালের উৎপাদন হবে তিন কোটি ৯৭ লাখ টন। প্রতিদিন জনপ্রতি ৪০৫ গ্রাম করে চালের হিসাব করলে ১৭ কোটি মানুষের জন্য চালের প্রয়োজন হবে দুই কোটি ৫১ লাখ ৩০ হাজার টন। অন্যান্য ভোগের জন্য ২৬.১২ শতাংশ হিসাব করে চালের প্রয়োজন এক কোটি চার লাখ টন। ফলে মোট চালের প্রয়োজন হবে তিন কোটি ৫৫ লাখ টন। সে হিসাবে চাল উদ্বৃত্ত থাকবে ৪২ লাখ টন।
এ বিষয়ে ব্রি মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ‘চলতি বছর আমন ধানের বাম্পার ফলনের দুটি কারণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আবহাওয়া, বিশেষ করে তাপমাত্রা ও সূর্যালোকের প্রভাব। অন্যটি বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় অনেক নিচু জমি আমন চাষের আওতায় এসেছে। ২০২১ সালের তুলনায় এবারে আমনের ফলন প্রায় ৭ শতাংশ বেশি হয়েছে। আমাদের হিসাব অনুযায়ী আগামী জুন পর্যন্ত দেশে চালের কোনো সংকট হবে না। এই সময়ে চাল উদ্বৃত্ত থাকতে পারে ৪২ লাখ টন। ’
ব্রির গবেষণার তথ্য বলছে, বিগত ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আমন মৌসুমের আবহাওয়ার উপাদান, বিশেষ করে পরিষ্কার সূর্যালোক, সৌর বিকিরণ, গড় তাপমাত্রা, আপেক্ষিক আর্দ্রতা এবং মেঘমুক্ত আকাশের প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আমনের ভালো ফলনের জন্য এগুলো ভালো অবদান রেখেছে।