স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের দিঘলবাক (ফেচি) গ্রামের রহস্যঘেরা বাড়ি থেকে দিনভর অভিযান চালিয়ে বোমা তৈরির বিস্ফোরক, রাসায়নিক দ্রব্য, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৮ জানুয়ারি সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বোম ডিসপোজল ইউনিট, স্পেশাল একশন গ্রুপ, কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম, ডিএমপি ঢাকা, টেরোরিজম ইউনিট এবং সেনাবাহিনীর একটি বোম ডিসপোজল টিম ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিল। বাড়িটি ঘেরাও করে দীর্ঘক্ষণ প্রতিটি কক্ষে অভিযান চালায় পুলিশ। বিকেলে বিস্ফোরক পাওয়ার কথা জানায় পুলিশ। তবে কোন ভারী অস্ত্র ও বোমা বাড়িটিতে ছিলনা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) রিপন কুমার মোদক বিকেল সাড়ে ৫টায় জানান, জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের দিঘলবাক গ্রামের আখলাকুর রহমানের ছেলে আফজাল হোসেন (৩৫) একটি পুরনো বাড়িতে রহস্যজনকভাবে বসবাস করতো। গত ৬ জানুয়ারি আদালত তার বিরুদ্ধে সমন জারি করে। জগন্নাথপুর থানার এসআই মোহাম্মদ নূরে আলম আফজাল হোসেনের এই সমন নিয়ে রবিবার সকালে তার বাড়ি যায় জগন্নাথপুর থানা পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি ঠের পেয়ে আফজাল হোসেন পালিয়ে যায়। এসময় পুলিশ ওই বাড়িতে প্রবেশ করে বিভিন্ন কক্ষে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস, বিস্ফোরক পাউডার, অস্ত্র ও যন্ত্রপাতি দেখতে পেয়ে অবাক হয়। পরে অভিযান পরিচালনাকারী এই দল পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সহায়তা চায়। সকাল থেকেই বাড়িটি ঘিরে রাখে পুলিশ। একদল ভিতরে অভিযান চালায়। পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পুলিশের বোম ডিসপোজল ইউনিট, স্পেশাল একশন গ্রুপ, কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম, ডিএমপি ঢাকা, টেরোরিজম ইউনিট এবং সেনাবাহিনীর একটি বোম ডিসপোজল টিম ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। তারা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাড়িটির প্রতিটি কক্ষ তল্লাশি করে। এসময় সেনা বাহিনীর বোম ডিসপোজল টিমও আসে। তবে তারা কিছুক্ষণ পরেই চলে যায়। তিনি আরো জানান, পুলিশ বাড়িতে প্রবেশ করে বিভিন্ন কক্ষ থেকে
লেপটপ, মোবাইল, ওয়াকিটকি, রাসায়নিক দ্রব্য, বিস্ফোরক পাউডার, রামদা, চাকু, পাইপসহ নানা ধরনের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস উদ্ধার করে। এসব দ্রব্য ও যন্ত্র বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহার করা হয় বলে তিনি জানান। কোন জঙ্গি বা বিচ্ছিন্নতাবাদী বড়ো ধরণের নাশকতার চেষ্টা করছিল কি না তা আলামত থেকে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এদিকে রোববার সকাল থেকেই ওই এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাড়ির আশপাশে অবস্থান নেয় পুলিশের একাধিক টিম। আশপাশে কাউকে আসতে দেয়নি পুলিশ। যার ফলে এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বিকেল ৩টার দিকে অভিযান শেষ করে পুুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ আলাদাভাবে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার মোদক।
আশারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আয়ূব খান বলেন, যে বাড়িটিতে অভিযান চালানো হয়েছে সেই বাড়ির মালিক আফজাল একজন চিহ্নিত অস্ত্রবাজ। বিভিন্ন সময়ে সে অস্ত্রসহ ধরা পড়েছে। উদ্ধারকৃত আলামত খতিয়ে দেখে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।