স্টাফ রিপোর্টার::
২০২২ সনের জুন মাসে মহাপ্লাবনে ক্ষতিগ্রস্ত সুনামগঞ্জ জেলার তিনটি উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ‘বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত নারী ও কন্যাশিশুদের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সুরক্ষা প্রকল্পের’ কাজ সমাপত্ত হয়েছে। সুনামগঞ্জের তিনটি উপজেলাসহ সিলেট জেলার কম্পানিগঞ্জ উপজেলার একটি একটি ইউনিয়নেও একই কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘উত্তরণ’র উদ্যোগে এবং ক্রিশ্চিয়ান এইডের সহায়তায় ইউ এন উইমেনের অর্থায়নে ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই সময়ে ১০টি ইউনিয়নে ১০টি নারীবান্ধব বহুমুখি অস্থায়ী শেল্টার নির্মাণ করা হয়েছে যাতে দুর্যোগকালে নারী ও কন্যাশিশুরা আশ্রয় নিয়ে সুরক্ষিত থাকতে পারেন।
বাস্তবায়নকারী সংস্থা উত্তরণ সূত্রে জানা গেছে, বন্যার ভয়াবহতায় সুনামগঞ্জের নারী ও মেয়েশিশুরা সংসারের বহুমুখি ক্ষতির পাশাপাশি মানসিকভাবে ভয়ানকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। এই অবস্থায় উত্তরণ ও দাতা সংস্থারা সহযোগিতায় এগিয়ে আসে। সরকারের যথাযত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার রফিনগর, জগদল, চরনারচর, ছাতক উপজেলার ভাতগাও, উত্তর খুরমা, ইসলামপুর, জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী, ভীমখালি ও জামালগঞ্জ সদরে নারী ও মেয়েশিশুদের সহায়তায় কাজ শুরু হয়। একই সঙ্গে একই প্রকল্প ও কর্তৃপক্ষ সিলেট জেলার কম্পানিগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নেও সহায়তা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে। ১০টি শেল্টার কেন্দ্র নির্মাণের পর প্রতিটিটিতে জীবন দক্ষতাবিষয়ক প্রশিক্ষণ পরিচালিত হয়। সুবিধাভোগীরা নারীর ক্ষমতায়ন, দুর্যোগে ক্ষতি প্রশমন, নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতারোধে করণীয়সহ নানা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। পাশাপাশি সুবিধাভোগী ৭ হাজার ১০৩টি নপরিবারকে প্রকল্পের আওতায় ৩৫ লক্ষ, ৫১ হাজার পাঁচশত টাকা বিতরণ করা হয়।
সুবিধাভোগী নারী আনোয়ারা বেগম বলেন, গত বন্যায় আমাদের ঘর সংসারের সব কিছু তছনছ হয়ে গিয়েছিল। আমরা নারী ও মেয়ে শিশুরা অনিরাপদ ছিলাম। আমাদের আশ্রয়স্থল ছিলনা। নিরাপদে বসবাসের কোন ব্যবস্থাই ছিলনা। এসময় শারিরিক ও মানসিক কষ্ট সইতে হয়েছে। উত্তরণ ও দাতাদের পক্ষ থেকে আমাদের এলাকায় একটি শেল্টার গড়ে দেয়া হয়েছে। এখন আমরা দুর্যোগে এখানে আশ্রয় নিতে পারব। তাছাড়া দুর্যোগকালীন কিভাবে নিরাপদ থাকতে হবে এবং পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে সেই প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। অপর সুবিধাভোগী নারী সুরতজান বলেন, আমরা প্রশিক্ষণের সঙ্গে নগদ টাকাও পেয়েছি। তবে আমাদের উপকারে আসবে শেল্টার। এই সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান এই নারী।