স্টাফ রিপোর্টার::
ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেছেন, আমাদের প্রাচীন মাজার, প্রতœনিদর্শন, ঐতিহাসিক স্থাপনা সংরক্ষণ করতে হবে। আমি বহুবার সিলেটে প্রতœ যাদুঘর, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের কথা বলেছি। তাহিরপুরের লাউড় রাজ্যকে খনন করে আমাদের ইতিহাস উদ্ধার করতে হবে। তাহিরপুরের লাউড়ের নামে উপজেলার নাম হতে পারে। আজকের এই সাহিত্যমেলা থেকে সেসব ঘোষণা আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
১৮ জানুয়ারি বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমির হাসনরাজা মিলনায়তনে দুদিনব্যাপী সাহিত্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পরে তিনি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে জেলার শ্রেষ্ট মৌলিক লেখক সাহিত্যিকসহ তৃণমূলের কবি সাহিত্যিকরা অংশ নেন। দিনব্যাপী উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, প্রবন্ধ, আলোচনা, লেখক আড্ডা ও কর্মশালা শেষে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সাহিত্যমেলার আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আতাউর রহমান, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. কুতুব আজাদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ প্রমুখ।
প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে সুনামগঞ্জের কথাসাহিত্য, নাটক, প্রবন্ধ নিয়ে নির্ধারিত প্রবন্ধ পাঠ করেন সুখেন্দু সেন, সুনামগঞ্জের সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে প্রবন্ধ পাঠ করেন মোহাম্মদ সুবাস উদ্দিন, সুনামগঞ্জের কবিতা, ছড়া নিয়ে প্রবন্ধ পাঠ করেন শামস শামীম। এই প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন কবি ইকবাল কাগজী, কল্লোল তালুকদার চপল ও সুমনকুমার দাশ।
মধ্যাহ্নভোজের পর লেখক আড্ডা সঞ্চালনা করেন মোহাম্মদ জাকির হোসেন। এসময় লেখক আড্ডায় কথা বলেন সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের বাংলাবিভাগের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট গবেষক ড. রোখসানা পারভিন চৌধুরী, ইশতিয়াক রুপু, কুমার সৌরভ, হাসান মোরশেদ, প্রমুখ। লেখকরা তাদের লেখালেখি ও লেখালেখি বিষয়ে উপস্থিত তরুণ সাহিত্যকর্মীদের কিছু পরামর্শ দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মোহাম্মদ সাদিক আরো বলেন, অতীত থেকেই বাঙালি কখনো মাথা নত করেনি। আমাদের সাহিত্যে আমাদের সেই সংগ্রাম ও বিদ্রোহকে তুলে ধরতে হবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, যোদ্ধাহত মুুক্তিযোদ্ধা, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের গৌরারং জমিদার বাড়ির রঙমহলে যামিনী রায়ের ছবি ছিল। রঙমহলে বসে নারীরা অনুষ্ঠান দেখতে পারতেন। তাদেরকে দেখা যেতোনা, কিন্তু তারা সব দেখতে পারতেন। এমন আধুনিক ব্যবস্থা ছিল। আমাদের এসব প্রতœসম্পদ আতœসাৎকারীদের কবল থেকে রক্ষা করতে হবে। আজকের সাহিত্য মেলার মাধ্যমে এসব ঘোষণা আসতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আজ থেকে ৭০ বছর আগে সুনামগঞ্জে সাহিত্য সম্মেলন হয়েছিল। যেখানে বংশিকু-া থেকে পা-ব পর্যন্ত শীলালিপি উদ্ধার, ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীকে সুরক্ষার ঘোষণা ছিল। আজকের সাহিত্য মেলা থেকে এমন ঘোষণা আসলে ফলপ্রসু হবে মেলা।
তিনি আরো বলেন, আমরা প্রাচীনকাল থেকেই মফস্বলী। প্রাগজ্যোতিষপুর, আসাম, বৃটিশ আমল, পাকিস্তান আমল, বাংলাদেশ আমলেও আমরা মফস্বলী ছিলাম। তবে আমাদের লোক মহাজন, কবি সাহিত্যিকরা আমাদের সারাবিশ্বে আলোকিত করেছেন। আমাদের শাহেদ আলীর জিবরাইলের ডানা নিয়ে সিনেমা বানাতে চেয়েছিলেন সত্যজিত রায়। আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, সাহিত্যকে জানার চেষ্টা করতে হবে।