হাওর ডেস্ক::
এক বছরে রপ্তানি আয় দেড় লাখ কোটি টাকা বেড়েছে বলে সংসদে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি জানান, করোনার ধাক্কা সামলে ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের পণ্য রপ্তানি করে ৫ লাখ ২৬ হাজার ১৮৮ কোটি ৭ লাখ টাকা আয় হয়েছে। এটি আগের অর্থবছরের চেয়ে এক লাখ ৪১ হাজার ৪২৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বেশি।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ তথ্য জানান তিনি। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন সরকারি দলের সংসদ সদস্য এম আব্দুল লতিফ।
একই সংসদ সদস্যের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের ১৮৩টি তৈরি পোশাক কারখানা ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউডিন্সল হতে সবুজ কারাখানার স্বীকৃতি পেয়েছে।
সরকারি দলের বেনজীর আহমদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, নেপাল ও মালদ্বীপ ছাড়া সার্কভুক্ত অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১২ হাজার ৬৬৫ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। একই অর্থবছরে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতে হয়েছে ১৯ হাজার ৩৫৩ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তানের সঙ্গে ৭ দশমিক ৮৭ মিলিয়ন, ভুটান সঙ্গে ২৫ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন, ভারতের সঙ্গে ১১ হাজার ৯২৯ দশমিক শূন্য এক মিলিয়ন, পাকিস্তানের সঙ্গে ৬৯৫ দশমিক ২১ মিলিয়ন, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ১১০ দশমিক ৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। অপরদিকে নেপালের সঙ্গে ৯৯ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ও মালদ্বীপের সঙ্গে তিন দশমিক ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাণিজ্য উদ্বৃত্ত হয়েছে।
সরকারি দলের মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি জানান, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ১৫ হাজার ৫৬৫ দশমিক ১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে তা ৪৫ হাজার ৩৬৭ দশমিক ১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ সময়ে রফতানি আয় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিদেশে যেতে খরচের হিসাব
বিশ্বের ১৫টি দেশে অভিবাসনে কী পরিমাণ খরচ হয় সেই তথ্য সংসদকে জানালেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান রাঙার প্রশ্নের জবারে তিনি জানান, জি টু জি পদ্ধতিতে (সরকারিভাবে) তিনটি দেশে অভিবাসনের সুযোগ রয়েছে। এ হিসেবে জর্ডানে মহিলা কর্মী ১৮ হাজার ২৪০ টাকা ও পুরুষ কর্মী ২৬ হাজার ৮০০ টাকা, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩৬ হাজার ৮৬০ টাকা ও মালয়েশিয়ায় শূন্য খরচে অভিবাসনের সুযোগ রয়েছে।
মন্ত্রীর উপস্থাপিত তথ্য মতে, অভিবাসনে সিঙ্গাপুরে দুই লাখ ৬২ হাজার ২৭০ টাকা, সৌদি আরবে এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা, মালয়েশিয়া ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা, লিবিয়ায় এক লাখ ৪৫ হাজার ৭৮০ টাকা, বাহরাইন ৯৭ হাজার ৭৮০ টাকা, সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক লাখ ৭ হাজার ৭৮০ টাকা, কুয়েতে এক লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা, ওমানে এক লাখ ৭৮০ টাকা, ইরাকে এক লাখ ২৯ হাজার ৫৪০ টাকা, কাতার এক লাখ ৭৮০ টাকা, জর্ডানে এক লাখ ২ হাজার ৭৮০ টাকা, মিশর এক লাখ ২০ হাজার ৭৮০ টাকা, রাশিয়ায় এক লাখ ৬৬ হাজার ৬৪০ টাকা এবং মালদ্বীপে এক লাখ ১৫ হাজার ৭৮০ টাকা খরচ হয়।
জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরে (১ জুলাই ২০২২ থেকে ১৭ জানুয়ারি ২০২৩) এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৭৭ হাজার ১১৪ জন বাংলাদেশি কর্মীর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এই সংখ্যা প্রায় এক লাখের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
দেশে খাদ্য ঘাটতি নেই
দেশে বর্তমানে কোনো খাদ্য ঘাটতি নেই বলে সংসদকে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সরকারি দলের আবুল কালাম আজাদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো জানান, গত অর্থবছরে ৩৮০ দশমিক ৪৮ লাখ মেট্রিক চন চাল ও ১০ দশমিক ৮২ লাখ মেট্রিক টন গমসহ ৩৯১ দশমিক ৩০ লাখ খাদ্য শস্য উৎপাদিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরেও দেশে খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা নেই বলেও মন্ত্রী দাবি করেন।