হাওর ডেস্ক::
ইরানের একটি সামরিক কারখানায় ড্রোন হামলার পেছনে সম্ভবত ইসরায়েল রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা।
ইরান দাবি করেছে, শনিবার রাতে মধ্যাঞ্চলীয় শহর ইসফাহানের কাছে একটি সামরিক কারখানায় ড্রোন হামলা প্রতিহত করেছে তারা এবং এতে কোনো প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, ওই হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ স্বতন্ত্রভাবে নির্ণয় করা যায়নি। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেজে রাতের আকাশে আলোর ঝলকানি এবং ঘটনাস্থলে জরুরি পরিষেবার যানবাহন দেখা গেছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ইরানের প্রধান শত্রু ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, তেহরানের পারমাণবিক অথবা ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচী সীমিত করতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে ইরানের লক্ষ্যস্থলগুলোতে হামলা চালাবে তারা।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের (পেন্টাগন) মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ইরানে হামলার সঙ্গে কোনোভাবেই যুক্ত ছিল না।
এ হামলার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের ভূমিকার দিকে মার্কিন কর্মকর্তারা ইঙ্গিত করছেন, এ নিয়ে প্রথম খবর প্রকাশ করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল; তাদের প্রতিবেদনে অজ্ঞাত বেশ কয়েকটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়েছে তারা।
পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা রোববার রয়টার্সকে বলেছেন, ওই হামলার ঘটনায় ইসরায়েল জড়িত ছিল বলে মনে হয়েছে।
তবে বেশ কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা শুধু বলেছেন, এ হামলার ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন কোনো ভূমিকা পালন করেনি; কিন্তু আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরআবদুল্লাহিয়ান বলেছেন, “এটি একটি কাপুরুষোচিত হামলা। দেশের ভেতরে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টির চেষ্টায় এটি করা হয়েছে।”
তবে এ হামলার জন্য তিনি কাউকে দায়ী করেননি। কিন্তু টেলিভিশনে করা মন্তব্যে দেশটির আইনপ্রণেতা হোসেইন মিরজায়ি বলেছেন, “এ হামলার পেছনে ইসরায়েল আছে এমন জোরালো ধারণা আছে।”
তেহরানের পারমাণবিক তৎপরতা ও ইউক্রেইনের যুদ্ধে রাশিয়াকে দীর্ঘ পাল্লার ‘আত্মঘাতী ড্রোনসহ’ অস্ত্র পাঠানো নিয়ে পশ্চিমা শক্তিগুলোর সঙ্গে ইরানের উত্তেজনা চলার পাশাপাশি দেশের ভেতরে কয়েক মাস ধরে চলা সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে এ ড্রোন হামলার ঘটনাটি ঘটেছে।
ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই বিস্ফোরণে শুধু সামান্য ক্ষতি হয়েছে এবং কেউ হতাহত হয়নি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমিরআবদুল্লাহিয়ান সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমাদের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে অগ্রসর হতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ আমাদের বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা কোনো প্রভাব ফেলবে না।”
গত মাসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ক্ষমতায় ফিরে এসেছেন, সঙেগ্ নিয়ে এসেছেন তার দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কট্টর ডানপন্থি সরকার। এ সময় ইরানে হওয়া হামলার পেছনে সত্যি সত্যি ইসরায়েল থাকলে তা হবে নেতানিয়াহুর নতুন মেয়াদে চালানো এ ধরনের প্রথম হামলা।