স্টাফ রিপোর্টার::
জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে নির্যাতিত ছাত্রলীগের সাবেক তারকা ছাত্রনেতাদের নেতৃত্ব দিলে সংগঠন গতিশীল হবে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের আদর্শিক নেতাকর্মীরা। পচাত্তর পরবর্তী দুঃসময়ে যারা সামরিক সরকার, জিয়া সরকার, স্বৈরাচার এরশাদ সরকার, জামায়াত বিএনপির জোট আমল, ওয়ান ইলেভেন, অপারেশন ক্লিনহার্টে যারা রাজপথে সোচ্চার ছিলেন এবং সাম্প্রতিক মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে যারা বুক চিতিয়ে আওয়ামী লীগের আদর্শ প্রচার করেছেন তাদেরকে নেতৃত্ব দিয়ে কমিটি সাজানোর আহ্বান জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা। আদর্শিক ও নির্যাতিতদের মূল্যায়ণ করলে সংগঠনিক শক্তি সুদৃঢ় হবে এবং দুঃসময়ের অগ্নীপরীক্ষায় নেতাকর্মীরা আন্দোলন থেকে পিছপা হবেননা বলে মনে করেন তারা।
উল্লেখ্য আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি শনিবার সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে পচাত্তর পরবর্তী দুঃসময়ে ছাত্রলীগে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। যারা অভিমানে নিষ্কৃয় আছেন কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তাদেরকে সামনে নিয়ে আসতে হবে। এতে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হওয়ার পাশাপাশি আদর্শিকভাবেও অনুপ্রাণিত হবেন।
জানা গেছে পচাত্তর পরবর্তী দুঃসময়ে ছাত্রলীগকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট রাজনৈতিক সহচর এডভোকেট খলিলুর রহমানের ছেলে এডভোকেট হায়দার চৌধুরী লিটন, সুবীর তালুকদার বাপ্টু, করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল, তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পরবর্তীতে জিতেন্দ্র তালুকদার পিন্টু, এডভোকেট আক্তারুজ্জামান আহমাদ সেলিম, স্বপন কুমার রায় সপু, মনীষকান্তি দে মিন্টু, শাহরিয়ার বিপ্লব, তনুজ কান্তি দে, কল্লোল তালুকদার, সত্যজ্যোতি দাস লিপন, নবনী কান্ত দাস, প্রদীপ পাল নিতাই, বিজয় তালুকদার, শাহীন তালুকদার, শেরুল আহমদ, জুবের আহমদ অপু, সেলিম আহমেদসহ সাহসী ছাত্রনেতারা রাজপথে নির্যাতিত হয়েছেন। তারা মামলা-হামলার পাশাপাশি নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখনো আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে রাজপথে সক্রিয় রয়েছেন। দল ক্ষমতায় আসার পরও রাজনৈতিক ও অন্যান্যভাবেও তাদের মুল্যায়ণ হয়নি। তাদের বদলে হাইব্রীড ও আওয়ামী লীগের আদর্শের প্রতি অনুরাগ নেই এমন নেতাদের মূল্যায়ণ করা হয়েছে। তারা সংগঠনে ডুকে ত্যাগী ও আদর্শিক নেতাদের খেদিয়ে বিদায় করেছে বলে অভিযোগ আছে। বিভিন্ন স্থানে নির্যাতন ও মামলা হামলায়ও জড়িয়ে তাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সরকারি কৌশুলী এডভোকেট আক্তারুজ্জামান আহমাদ সেলিম বলেন, আশির দশক থেকে ছাত্রলীগ করছি। প্রতিটি আন্দোলনে, সংগ্রামে ছিলাম। নির্যাতিত হয়েছি। হুলিয়া নিয়ে ঘুরেছি। আমার মতো শত শত ছাত্রনেতা এভাবে জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে আছে। তাদেরকে রাজনৈতিক পুনর্বাসিত করা হলে সংগঠন গতিশীল হবে। সাংগঠিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এই নেতারা আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধকে বুকে ধারণ করেন। তারা নেতৃত্বে আসলে দল ও দেশ উপকৃত হবে।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও আশির দশকের নির্যাতিত ছাত্রলীগ নেতা প্রদীপ পাল নিতাই বলেন, এরশাদ আমলে আমার উপর ১৭-১৮টি মামলা ছিল। ওই সময় বাড়িতে থাকতে পারিনি। আমার ভাইকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করেছে। আমার মতো ছাত্রলীগের শত শত এমন নির্যাতিত নেতা এখন উপেক্ষিত। তাদেরকে খুজে বের করে নেতৃত্ব দিলে তৃণমূল শক্তিশালী হবে। রাজনৈতকভাবে অভিজ্ঞ ছাত্রলীগ নেতারা দায়িত্ব পেলে আগামী দিনে শেখ হাসিনার ভিশনগুলো সাকসেসফুলভাবে সম্পন্ন করতে পারবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রকৃত আদর্শ ও আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক আদর্শ ধারণ করে তারা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকেও শক্তিশালী করতে পারবে। নির্যাতিত ছাত্রলীগ নেতাদের মূল্যায়ণ করলে তৃণমূলও সাহস পাবে। তৃণমূলও সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হবে।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আহমদ হোসেন বলেন, ত্যাগী, নির্যাতিত ও আদর্শিক নেতাদের মূল্যায়ণ করা হবে।