বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মহালিয়া হাওরের বোরো ফসল রক্ষা বাধ নির্মাণে গাফিলতির অভিযোগে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) দুই সভাপতিকে আটক করার পর মুছলেকা ও জরিমানা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে তাদের আটক করার পর রাত সাড়ে ৮টায় তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আটক পরবর্তী মুছলেকা দিয়ে ছাড়া পাওয়া পিআইসি সভাপতিরা হলেন, মহালিয়া হাওরের ১৬ নং পিআইসি সভাপতি ফজলুল হক ও ১৯ নং পিআইসি সভাপতি মোসাহিদ মিয়া।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারি কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) আসাদুজ্জামান রনি জানান, মহালিয়া হাওরের ১৬ ও ১৭ নম্বর প্রকল্পের বাধের কাজ শেষ করার জন্য উপজেলা কমিটি বারবার তাড়া দিচ্ছিল। কিন্তু কমিটির লোকজন সময় শেষ হয়ে আসলেও কাজ শেষ করছেনা। কাজে তাদের অবহেলা ও অনিয়ম রয়েছে। তাই তাদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয় দুপুরে। রাতে তাদের কাছ থেকে মুছলেকা ও অর্থদ- আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্যাট ও সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) আসাদুজ্জামান রনি জানান, শুক্রবার সকালে উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন বিভিন্ন বাঁধ পরিদর্শনে যায় প্রশাসনের একটি বিশেষ টিম। এ সময় পরিদর্শন টিম দেখতে পান, মহালিয়া হাওরের পিআইসি ফজলুল হক ও মোশাহিদ মিয়া নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে আসলেও ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করেননি। বাঁধের কাজে গাফিলতি রয়েছে। এ বিষয়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হলেও তারা সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। তাই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে আটক করা হয়েছিল। রাতে মুছলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, সরকারি নীতিমালা মেনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এক ফসলি বোরো ধান রক্ষায় নির্মিত বাঁধে যারাই গাফিলতি করবে তাদেরকে ছাড় দেয়া হবে না। বাঁধ নির্মাণ কাজে গাফিলতি ও বন্ধ রাখার কারণে দুই পিআইসির সভাপতিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আটক করা হয়েছে। পরিদর্শনে যেখানেই অনিয়ম পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তাহিরপুর উপজেলা হাওররক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব শওকত উজ্জামান বলেন, এই দুই পিআইসি সভাপতিকে কাজ শেষ করার জন্য বারবার বলা হচ্ছে। তারা শুনছেনা। গুরুত্বপূর্ণ কাজটি ফেলে রেখেছে। তাই কৃষকদের দাবির প্রেক্ষিতে তাদেরকে আটক করা হয়েছিল।
এদিকে আটককৃত পিআইসি সভাপতি মোশাহিদ মিয়া জানান, তাদেরকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে বিলম্বে। তাছাড়া মাটি কাটার জন্য তারা এক্সেভেটর মেশিন পাচ্ছেন না। তাই কাজ শেষ করতে পারছেন না। তবে মুচলেকা ও অর্থদ- দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে তাহিরপুর উপজেলায় ৮৫ কিলোমিটার ফসলরক্ষা বাধ নির্মাণ ও সংষ্কারে ১১৩ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।